বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে মেয়ের মামলা
শিক্ষার্থী মেহরীন আহমেদ

বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে মেয়ের মামলা খারিজ, পারিবারিক মধ্যস্থতার সুযোগ দিল আদালত

শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে করা মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত, মামলাকারী ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষার্থী মেহরীন আহমেদের (১৯) পারিবারিক মধ্যস্থতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) মামলার শুনানির দিন ধার্য ছিল। আদালতে মেহরীন এবং তার বাবা নাসির আহমেদ ও মা জান্নাতুল ফেরদৌস স্ব-শরীরে হাজির হন।

শুনানির সময় মেহরীনের আইনজীবী সোমায়দাদ শাহরিয়া ফিদা এবং তার বাবা-মায়ের আইনজীবী আবুল হোসেন আদালতে জানান, তারা পারিবারিকভাবে বিষয়টি মীমাংসা করতে ইচ্ছুক।

আদালত উভয় পক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা খারিজ করে দেন এবং পারিবারিকভাবে সমঝোতা করার নির্দেশ দেন।

মেহরীনের আরেক আইনজীবী ইসফাকুর রহমান গালিব বলেন, “এই ঘটনা আমাদের সমাজের জন্য একটি সতর্ক সংকেত। সন্তানের সঙ্গে সময় না দিলে, সামাজিক ও ধর্মীয় শিক্ষা না থাকলে, পিতা-মাতার সঙ্গে দূরত্ব এমন পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে যে, আদালতে গিয়ে তা নিষ্পত্তি করতে হয়।”

তিনি অভিভাবকদের সন্তানদের লালনপালনের ব্যাপারে নতুনভাবে ভাবার আহ্বান জানান।

এর আগে গত ২২ জুন মেহরীন তার বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়ের করেন।

এরপর ১০ জুলাই আদালতে হাজির হয়ে মেহরীন বলেছিলেন, “আমি বাবা-মায়ের পাপেট নই। আমাকে কেন গালি দেবে, কেন শারীরিক-মানসিক হেনস্তা করবে? আমি আমার সুরক্ষা চাই।”

মামলায় বলা হয়েছিল, ২৫ মে সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বাসায় মেহরীনকে তার বাবা-মা শারীরিকভাবে আঘাত করেন, গালিগালাজ করেন এবং তাকে নীলাফুলা জখম করেন।

অভিযোগে আরও উল্লেখ ছিল, মেহরীন একজন প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে, পরিবারে দৈনন্দিন ব্যবহৃত জিনিসপত্র ব্যবহারেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। তার ওপর চলে মানসিক নির্যাতন, ভয়ভীতি ও সামাজিকভাবে অপমান করার চেষ্টাও।

আদালত শেষপর্যন্ত পারিবারিক সমঝোতার ভিত্তিতে মামলা খারিজ করে দিয়েছেন এবং উভয় পক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে পৌঁছানোর নির্দেশ দিয়েছেন।