বিচার ব্যবস্থায় বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া হিসেবে মধ্যস্থতার ব্যবহার বাড়াতে আইন পেশাজীবীদের দক্ষতা উন্নয়নে একটি বেসিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রশিক্ষণটি আয়োজন করে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা), আইন ও বিচার বিভাগ (এলজেডি) এবং বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (জেএটিআই)।
‘অ্যাকসেস টু জাস্টিস (ATJ) প্রকল্প’-এর আওতায় সম্প্রতি জেএটিআই-তে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন বিচারক, জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা ও আইনজীবীসহ ৫০ জন পেশাজীবী। তাদের মধ্যস্থতা বিষয়ক তাত্ত্বিক জ্ঞান, বাস্তব কৌশল ও অনুশীলনভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
প্রশিক্ষণ পরিচালিত হয় ইন্টারঅ্যাকটিভ লেকচার এবং রোল-প্লে অনুশীলনের মাধ্যমে, যেখানে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন জাপানি মধ্যস্থতা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইরিয়ে হিদেয়াকি। তিনি তার আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে ভাগ করে নেন।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের এপ্রিলে শুরু হওয়া ATJ প্রকল্পের অধীনে এখন পর্যন্ত ২৪০ জন পেশাজীবী এই প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য— দেশের বিচার ব্যবস্থায় মধ্যস্থতার মাধ্যমে দ্রুত, সহজ ও ব্যয়সাশ্রয়ী সমাধান নিশ্চিত করা, বিশেষত প্রান্তিক জনগণের ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার বাড়ানো।
সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের এবং জাইকার বাংলাদেশ প্রধান ইচিগুচি তোমোহিদে। তারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের আহ্বান জানান— প্রশিক্ষণের জ্ঞান ব্যবহার করে সমাজে ‘স্পেশাল মিডিয়েটর’ হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে।
শেখ আবু তাহের বলেন, “মধ্যস্থতায় কৌশল ও নিয়ম যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি অংশগ্রহণকারীদের অনুভূতি ও প্রয়োজন বিবেচনায় রাখাও জরুরি।”
ইচিগুচি তোমোহিদে বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ একটি স্বচ্ছ, দক্ষ ও প্রান্তিকবান্ধব বিচারব্যবস্থা চায়। জাইকা এই রূপান্তরে অংশীদার হয়ে পাশে থাকবে।”
জাইকা আশা করছে, এই প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা ভবিষ্যতে লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস অ্যাক্ট অনুসারে ‘স্পেশাল মিডিয়েটর’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, যা মামলার জট কমাতে এবং বিচারপ্রক্রিয়ার বিকেন্দ্রীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।