কিছু পরিবর্তন এনে জাতীয় সংসদে ‘‌আয়কর বিল ২০২৩’ পাস
আয়কর

সরকারি কর্মকর্তাদের আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক: করযোগ্য ও করমুক্ত আয়ের তালিকা

সরকারি কর্মকর্তাদের আয়কর রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক। তাঁদের অনেক আয়ের ওপর কর দিতে হয়, আবার কিছু আয়ের ক্ষেত্রে কর দিতে হয় না।

বর্তমানে দেশে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। তাঁদের একটি অংশ এখনো করজালের বাইরে থাকলেও আয়কর আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট আয়ের ওপর কর দেওয়া আইনিভাবে বাধ্যতামূলক।

করযোগ্য আয়

সরকারি বেতন আদেশভুক্ত একজন কর্মচারীর মূল বেতন, উৎসব ভাতা ও বোনাস করযোগ্য আয় হিসেবে গণ্য হবে। এসব আয়ের ওপর নির্ধারিত হারে আয়কর দিতে হবে।

করমুক্ত আয়

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের আয়কর নির্দেশিকায় ৪২ ধরনের ভাতা ও সুবিধা করমুক্ত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চিকিৎসা ভাতা, নববর্ষ ভাতা, বাড়িভাড়া ভাতা, শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা, শিক্ষাসহায়ক ভাতা, কার্যভার ভাতা, পাহাড়ি ভাতা, ভ্রমণ ভাতা, যাতায়াত ভাতা, টিফিন ভাতা, পোশাক ভাতা, আপ্যায়ন ভাতা, ধোলাই ভাতা, বিশেষ ভাতা, প্রেষণ ভাতা, প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে প্রেষণ ভাতা, জুডিশিয়াল ভাতা, চৌকি ভাতা, ডোমেস্টিক এইড অ্যালাউয়েন্স, ঝুঁকি ভাতা, অ্যাকটিং অ্যালাউয়েন্স, মোটরসাইকেল ভাতা, আর্মরার অ্যালাউয়েন্স, নিঃশর্ত যাতায়াত ভাতা, টেলিকম অ্যালাউয়েন্স, ক্লিনার অ্যালাউয়েন্স, ড্রাইভার অ্যালাউয়েন্স, মাউন্টেড পুলিশ অ্যালাউয়েন্স, পিবিএক্স অ্যালাউয়েন্স, সশস্ত্র শাখা ভাতা, বিউগলার অ্যালাউয়েন্স, নার্সিং অ্যালাউয়েন্স, দৈনিক বা খোরাকি ভাতা, ট্রাফিক অ্যালাউয়েন্স, রেশন মানি, সীমান্ত ভাতা, ব্যাটম্যান ভাতা, ইন্সট্রাকশনাল অ্যালাউয়েন্স, নিযুক্তি ভাতা, আউটফিট ভাতা ও গার্ড পুলিশ ভাতা। এ ছাড়া অবসরকালে প্রদত্ত লাম্প গ্রান্টও করমুক্ত থাকবে।

রিটার্ন দেওয়ার প্রস্তুতির ৬ পরামর্শ

রিটার্ন জমা দেওয়ার আগে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কিছু প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি—

১. নথি আগে জোগাড় করুন : জাতীয় পরিচয়পত্র, চাকরির আইডি, গত বছরের রিটার্ন, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, বিনিয়োগ ও সঞ্চয়ের নথি গুছিয়ে রাখুন।

২. আয়ের উৎস স্পষ্ট করুন : মূল বেতন ছাড়াও ভাতা, চিকিৎসা খরচ, বাসাভাড়া, ভ্রমণ ভাতা ও অতিরিক্ত আয়ের তথ্য লিখুন।

৩. করমুক্ত ও করযোগ্য অংশ আলাদা করুন : সরকারি নিয়ম অনুযায়ী করমুক্ত ও করযোগ্য আয়ের হিসাব মিলিয়ে নিন।

৪. করছাড়ের সুযোগ নিন : জীবনবিমা, সঞ্চয়পত্র, শেয়ারবাজার বিনিয়োগ, শিক্ষা ব্যয় ইত্যাদির করছাড় গ্রহণ করুন।

৫. ভুল এড়িয়ে চলুন : বানান, অ্যাকাউন্ট নম্বর বা স্লিপ নম্বরের ভুল এড়ান। সব কাগজের কপি সংরক্ষণ করুন।

৬. সময়ের আগে জমা দিন : শেষ মুহূর্তের ঝামেলা এড়াতে সময়সীমার অন্তত ১০-১৫ দিন আগে রিটার্ন জমা দিন।