ঢাকা, ২৭ আগস্ট ২০২৫ – সুপ্রিম কোর্ট এবং সারাদেশের বিচার ব্যবস্থায় দুর্নীতি ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি (Democratic Lawyers Association of Bangladesh – DLAB) আজ এক বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। দুপুর ১টায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রবীণ নেতা এডভোকেট আব্দুর রহমান।
প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট হাসান তারিক চৌধুরী। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি ও ঢাকা বার শাখার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আনোয়ারুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সুপ্রিম কোর্ট বার শাখার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হুমাউন কবির, সহ-সভাপতি এডভোকেট হাফিফুর রহমান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক এডভোকেট রাম চন্দ্র দাস, দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট ইমরান হোসেন প্রমুখ।
সমাবেশে এডভোকেট হাসান তারিক চৌধুরী অভিযোগ করেন যে, সুপ্রিম কোর্টসহ সারাদেশে আদালত ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি ও অনিয়ম সীমা ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন, “২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর মানুষ আশা করেছিল দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। কিন্তু বাস্তবে চলছে আইনহীনতা, দুর্নীতি, মব সন্ত্রাস এবং চাঁদাবাজি।”
তিনি অভিযোগ করেন, বিচারক ও এটর্নি সার্ভিসের নিয়োগে মেধার পরিবর্তে স্বজনপ্রীতি ও কোটার প্রভাব বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। রাজনৈতিক মামলার আগাম জামিন বন্ধ করে রাখার কারণে অনেকেই ভোগান্তিতে পড়ছেন। এছাড়া রিট ও আপিল শুনানির জন্য পর্যাপ্ত বেঞ্চ না থাকায় লক্ষ লক্ষ মামলা ঝুলে আছে।
বক্তারা জানান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা নিজের কোট-গাউন রাখার জায়গা পান না, এমনকি কাঁধকেই “হ্যাংগার” হিসেবে ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পুরোনো ভবনটি জরাজীর্ণ এবং যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে। অথচ বহুতল ভবন নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত হচ্ছে।
এডভোকেট হাসান তারিক চৌধুরী অভিযোগ করেন, বার সমিতিসমূহ রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, “বার কাউন্সিল ও বার সমিতির সংবিধান সংশোধন ছাড়া এ অবস্থা থেকে উত্তরণের কোন পথ নেই।”
সমাবেশে নেতৃবৃন্দের দাবি
-
বিচারক নিয়োগে মেধা ও যোগ্যতার অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা
-
রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত স্বাধীন বিচারব্যবস্থা গড়ে তোলা
-
সুপ্রিম কোর্টে বহুতল আইনজীবী সমিতি ভবন নির্মাণ
-
অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বার-বেঞ্চের মর্যাদা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন
সভায় নেতৃবৃন্দ আরও অভিযোগ করেন, বার সমিতিগুলোর নির্বাচনের দাবি অযৌক্তিকভাবে উপেক্ষা করা হচ্ছে এবং অনেক সমিতি অন্যায়ভাবে দখল করে রাখা হয়েছে।