ঢাকার শাহবাগ থানার সন্ত্রাস বিরোধ আইনের মামলায় সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান পান্নার জামিন শুনানিতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন এক সাংবাদিক। বিচারক এজলাসে থাকাকালে বেসরকারি টেলিভিশন সময় টিভির আসিফ মোহাম্মদ সিয়াম নামে ওই সাংবাদিককে কয়েকজন আইনজীবী মিলে কিল, ঘুসি, লাথি মারেন। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন সিয়াম। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিব উল্লাস পিয়াসের আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির একটি প্রোগ্রাম থেকে লতিফ সিদ্দিকী, সাংবাদিক পান্নাসহ ১৬ জনকে আটক করা হয়। শুক্রবার শাহবাগ থানার সন্ত্রাস বিরোধ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
আজ লতিফ সিদ্দিকী এবং সাংবাদিক পান্নার জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল। লতিফ সিদ্দিকীতে আদালতে হাজির করা না হলেও সাংবাদিক পান্নাকে আদালতে হাজির করা হয়।
এই সংবাদ সংগ্রহ করতে আদালতে যান কয়েকজন সাংবাদিক। বেলা ২টা ৫৫ মিনিটের দিকে সাংবাদিক পান্নাকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের ৮ম তলায় ৩০নং এজলাসে তোলা হয়।
আরও পড়ুন : চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির স্মারকলিপি : সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি
মোক্তাদির রশীদ নামে এক সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান পান্নার কাছে জানতে চান, কারাগারে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে কি না? এ সময় এজলাসের বেঞ্চে বসে থাকা অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন মাহি আসামির সঙ্গে কথা বলার কারণ জিজ্ঞাসা করেন।
বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এ সময় তাকে আদালত থেকে বের হয়ে যেতে বলেন অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন।
ওই সাংবাদিক তার কাছে জানতে চান, আপনি কোর্ট ইন্সপেক্টর কি না যে আমাকে বেরিয়ে যেতে বলছেন। বিচারক বললে আমি বেরিয়ে যাব।
এরই মধ্যে বিচারক এজলাসে ওঠেন। শাহবাগ থানার একটি মামলার শুনানি শুরু হয়। এ সময় একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা সিয়াম এসে ওই আইনজীবীকে বলেন, উনি বহিরাগত না, একজন সাংবাদিক। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে বেঞ্চ থেকে লাফ দিয়ে উঠেই তার কানের ওপর ঘুসি মারেন।
এ সময় সিয়াম তার হাতে থাকা সময় টিভির মাইক্রোফোন উঠিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন। তখন আইনজীবী তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান। সিয়াম কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার কয়েকজন সহযোগী তাকে ঘিরে মারধর শুরু করে।
আদালত কক্ষে এ পরিস্থিতি দেখে এজলাস থেকে নেমে খাস কামড়ায় চলে যান বিচারক। এ সময় প্রসিকিউশনের পক্ষে থাকা কাইয়ুম হোসেন নয়ন ওই সাংবাদিককে উদ্ধার করে তাকে সাক্ষীর কাঠগড়ার কাছে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে সিয়াম বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই বিচারকের সামনে মব সৃষ্টি করে আমাকে মারধর করল কয়েকজন আইনজীবী। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
পরবর্তীতে বেলা ৩টা ২৫ মিনিটের দিকে বিচারক আবার এজলাসে আসেন। এরপর শুনানি নিয়ে আদালত লতিফ সিদ্দিকী এবং সাংবাদিক পান্নার জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।