বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আব্দুল কাইয়ুম আহাদ হত্যার ঘটনায় করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। একইসঙ্গে বিচারক হিসেবে দুর্নীতি ও বিদ্বেষমূলকভাবে বেআইনি রায় দেওয়া এবং জাল রায় তৈরির অভিযোগে শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলাতেও তিনি জামিন পাননি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকার পৃথক দুই আদালতে খায়রুল হকের পক্ষে জামিন চেয়ে শুনানি করেন তার আইনজীবী মোনায়েম নবী শাহিন। শুনানি শেষে হত্যা মামলায় ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ-১৮ এর বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। অপরদিকে দুর্নীতি ও জাল রায় সংক্রান্ত মামলায় ঢাকার ২য় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ নার্গিস ইসলাম জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।
খায়রুল হকের আইনজীবী মোনায়েম নবী শাহিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৮ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় আব্দুল কাইয়ুম আহাদের ওপর হত্যার উদ্দেশে গুলি চালানো হয়। ধারালো অস্ত্র, টিআরসেল, সাউন্ড বোমাসহ নানা ধরনের অস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয় তার ওপর। এ সময় আহাদের মুখ ও বুকে গুলি লাগলে তিনি যাত্রাবাড়ী থানার কাজলা পুলিশ বক্সের সামনে লুটিয়ে পড়েন। পরে তৎকালীন ওসি আবুল হোসেন তার দুই পায়ে ব্রাশ ফায়ার করেন।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক আব্দুল কাইয়ুম আহাদকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় গত ৬ জুলাই নিহতের বাবা মো. আলা উদ্দিন বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬৭ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়। এছাড়া এক থেকে দুই হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। ওই মামলার এজাহারনামীয় ৪৪ নম্বর আসামি ছিলেন এ বি এম খায়রুল হক।
অন্যদিকে বিচারক হিসেবে দুর্নীতি, বিদ্বেষমূলকভাবে বেআইনি রায় প্রদান এবং জাল রায় তৈরির অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন খায়রুল হকের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করেন।
গত ২৪ জুলাই সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমণ্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওইদিনই তাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রিক হত্যা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়।