চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট মোড়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় নিহত শহীদুল ইসলাম শহীদ হত্যা মামলায় ২৩১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মোস্তফা তদন্ত কর্মকর্তার দাখিল করা চার্জশিট গ্রহণ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী।
নিহতের ভাই শফিকুল ইসলাম চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করেছিলেন। তবে আদালত তা খারিজ করে দিয়ে চার্জশিট সরাসরি গ্রহণের আদেশ দেন।
মামলার শুরুতে বাদী ৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা চার্জশিটে ২৩১ জনকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন। মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ৮৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
আরও পড়ুন : অসদাচরণের অভিযোগে বিচারকের সাজা
অভিযোগপত্রে উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন, নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন ও নুরুল আজিম রনি।
আসামিরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় নগরের বহদ্দারহাটে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে পিস্তল, শর্টগানসহ ভারী অস্ত্র দিয়ে গুলি ছোড়া হয়।
আন্দোলনের সময় ষোলশহর মেয়র গলিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের বাসভবনে এবং পরে বহদ্দারহাট মোড়সংলগ্ন সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলার অভিযোগও রয়েছে।
পরে আন্দোলনে আহত শহিদুল ইসলাম শহিদকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিহত শহিদের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগপত্রে মোট ১২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ২৮ জন সাধারণ নাগরিক, ৯৯ জন পুলিশ সদস্য এবং ১ জন চিকিৎসক রয়েছেন।