ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় টানা পঞ্চম দিনে এসে প্রসিকিউশন পক্ষ তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম প্রসিকিউশনের পক্ষে পঞ্চম দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
ট্রাইব্যুনাল সোমবার (২০ অক্টোবর) থেকে আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ধার্য করেছেন। আসামিপক্ষ তাদের বক্তব্য উপস্থাপন শেষ করলে প্রসিকিউশন পক্ষ জবাব উপস্থাপন করবে।
এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের পিতাসহ নিহতদের পরিবারের সদস্যরা।
এছাড়া “স্টার উইটনেস” হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। সর্বমোট ৫৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলাটিতে।
প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম।
পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন যুক্তিতর্কে অংশ নেবেন।
অন্যদিকে গ্রেফতার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে রয়েছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
এই মামলায় গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। পরে দোষ স্বীকার করে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন।
এই মামলার বাইরে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা চলমান রয়েছে, একটি গুম-খুনের অভিযোগে এবং অন্যটি ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
প্রসিকিউশন পক্ষের দাবি, গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার, দলীয় ক্যাডার ও প্রশাসনের অংশবিশেষ পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল।
বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অভিযোগের বিচার প্রক্রিয়া চলমান।