একাধিকবার প্রশাসনিক বিষয়ে প্রকাশ্য বিবৃতি দেওয়ার ঘটনায় অধস্তন আদালতের বিচারকদের সংগঠন জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সেক্রেটারির বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলসহ সংশ্লিষ্টদের এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল হাদী এ নোটিশ পাঠান। নোটিশ প্রেরণকারী সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ আইনজীবী হলেন- কামরুল হাসান রিগ্যান, রবিউল আহমেদ, মো. জাকির হায়দার, আল রেজা মো. আমির এবং এ এইচ এম আনামুল হক।
নোটিশে বলা হয়েছে, জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন প্রকাশ্য বিবৃতি এবং প্রেস রিলিজ জারি করেছে, যা বিচারকের কোড অব কন্ডাক্ট লঙ্ঘন করে এবং বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা ও জনসাধারণের আস্থা ক্ষুণ্ণ করেছে। বিশেষ করে ২০২৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংসদের সমালোচনামূলক রেজুলেশন, ২০২৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর জাস্টিস অ্যাপয়েন্টমেন্ট কমিটিতে সুপ্রিম কোর্টের সভাপতির অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদ বিষয়ে, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রিফর্ম কমিশন প্রস্তাব, ২০২৫ সালের ১৯ মে নির্দিষ্ট আইনজীবীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এবং ১৪ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত এর বিবৃতি উল্লেখযোগ্য।
আরও পড়ুন : বিচারকদের বদলি-পদায়ন কমিটিতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে রাখায় উদ্বেগ
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, এই ধরনের প্রকাশ্য বিবৃতি জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের। পেশাগত সীমারেখা অতিক্রম করে, বিচারকের স্বাধীনতা ও জনসাধারণের আস্থা ক্ষুণ্ণ করে এবং বিচারকের কোড অব কন্ডাক্ট লঙ্ঘন করে।
নোটিশে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। যাতে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন অবিলম্বে সব সীমারেখা অতিক্রমকারী প্রকাশ্য বিবৃতি বন্ধ করে, সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেল যাতে প্রশাসনিক সতর্কবার্তা প্রদান করে, মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় আইনগত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন, জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কার্যক্রম পর্যালোচনা ও প্রয়োজনে শৃঙ্খলাগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল হাদি উল্লেখ করেছেন, বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং জনসাধারণের আস্থা রক্ষায় এই নোটিশ জারি করা অত্যন্ত জরুরি। সুপ্রিম কোর্টের কতিপয় আইনজীবী বিচার ব্যাবস্থার ভাবমূর্তি রক্ষার্থে এবং নিম্ন আদালতের বিজ্ঞ বিচারকদের সংঠনের নির্বাহী বিভাগসহ অন্যান্য বিষয়ে পাবলিক ফোরাম এ বক্তব্য দেওয়ার মাধ্যমে আপিল বিভাগের নির্দেশিত কোড অব কন্ডাক্ট ভঙ্গ করা থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে আগামী ১৯ অক্টোবরের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ করা হয়েছে এবং অন্যথায় যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।