পলাতক আসামিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনের খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে। ছবি: পিআইডি

পলাতক আসামিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না

পলাতক আসামিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না—এমন বিধান সংযোজনসহ নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।

আসিফ নজরুল বলেন, “আজকে আমাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ দুটি আইন পাস হয়েছে এবং তিনটি নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পাস হয়েছে বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশগণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ। নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় আইন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইনজুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর আইন।”

তিনি জানান, আলোচনার পর এই খসড়াগুলো চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবার উপদেষ্টা পরিষদে তোলা হবে।

আরও পড়ুন : সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় গঠনে নতুন অধ্যাদেশ উপদেষ্টা পরিষদে উঠছে, কমিশন প্রস্তাবে আপত্তি

আইন উপদেষ্টা বলেন, “আরপিও সংশোধনে ইভিএম সংশ্লিষ্ট সব বিধান বিলুপ্ত করা হয়েছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—বিভিন্ন মামলায় পলাতক ব্যক্তিরা আর নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।”

তিনি আরও জানান, “জেলার ইলেকশন অফিসগুলো পরিচালনা করবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি আয়, সম্পত্তিসহ সব আর্থিক তথ্য নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে, যা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।”

জামানতের পরিমাণ ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে বলে জানান আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, “২০১৪ সালের সাজানো নির্বাচনের মতো ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে। কোনো আসনে একজন প্রার্থী থাকলে ভোটাররা ‘না ভোট’ দিতে পারবেন। প্রার্থী না পছন্দ হলে সেখানে পুনঃনির্বাচন হবে।”

নির্বাচনী জোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জোটের প্রার্থীকেও নিজ দলের প্রতীকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে, যেন ভোটাররা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারেন তিনি কোন দলের প্রার্থী।”

এছাড়া নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের বিধান করা হয়েছে। প্রবাসীরাও এবার পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন।

খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, ভোট গণনার সময় গণমাধ্যমের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে। নির্বাচন কমিশন চাইলে কোনো কেন্দ্র নয়, বরং পুরো নির্বাচনী এলাকার ফলাফল বাতিলের ক্ষমতাও পাবে।