নওগাঁয় আদালতে জাল কাবিননামা দাখিল করে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ার ঘটনায় এক মামলার বাদীই এবার আসামিতে পরিণত হয়েছেন। আদালত মূল মামলার আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে উল্টো বাদীর বিরুদ্ধেই জালিয়াতির মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন।
নওগাঁর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট–৫-এর বিচারক মো. ফয়সাল আহমেদ এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মোছা. আদরী খাতুন (পিতা—মো. নাইমুল হক) দায়েরকৃত মামলায় আসামি ছিলেন মো. শরিফুল ইসলাম (পিতা—মো. সাইদুর রহমান)। মামলার শুনানির এক পর্যায়ে বাদীপক্ষ আদালতে ১১ জানুয়ারি ২০২২ তারিখের একটি কাবিননামা দাখিল করে।
কিন্তু দাখিলকৃত কাবিননামা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিলে আদালত নিকাহ রেজিস্ট্রারকে তলব করেন। তদন্তে সদর থানার পুলিশ জানতে পারে, কাবিননামায় স্বাক্ষরকারী “কাজী মো. আব্দুস ছাত্তার” নামের ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট স্ট্রোকজনিত কারণে মারা গেছেন। অথচ কাবিননামার তারিখ ২০২২ সালের ১১ জানুয়ারি—অর্থাৎ তার মৃত্যুর বহু বছর পরের।
এছাড়া ৩নং বক্তারপুর ইউনিয়নের বর্তমান কাজী আকরামুল হক আদালতকে জানান যে, তিনি ২০০৪ সাল থেকে অদ্যাবধি দায়িত্ব পালন করছেন এবং ওই ইউনিয়নে “আব্দুস ছাত্তার” নামে কোনো বৈধ কাজী কখনোই ছিলেন না।
তদন্ত ও সাক্ষ্যপ্রমাণে আদালত নিশ্চিত হন যে, উপস্থাপিত কাবিননামাটি জাল ও সৃজিত।
এর প্রেক্ষিতে বিচারক মো. ফয়সাল আহমেদ ফৌজদারী কার্যবিধির ২৪১(এ) ধারা অনুযায়ী আসামি মো. শরিফুল ইসলামকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেন এবং জাল কাবিননামা দাখিলের মাধ্যমে প্রতারণার অভিযোগে বাদী মোছা. আদরী খাতুনের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪২০/৪৬৭/৪৬৮ ধারায় মামলা রুজুর নির্দেশ দেন।

