বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ

আইনপেশা নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য: বিএনপি নেতাকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান

বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার কেদারপুরে অনুষ্ঠিত একটি সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদের আইনপেশা সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, ঢাকা আইনজীবী সমিতি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) পৃথক পৃথক বিবৃতিতে সংগঠনগুলোর নেতারা এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদের এই বক্তব্য দ্বারা আইন পেশার মতো মহান পেশার সঙ্গে জড়িত আইনজীবীদের অসম্মান করা হয়েছে। তার এই মানহানিকর বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢালাওভাবে প্রচারিত হওয়ায় আইনজীবীদের মান-মর্যাদা ও সামাজিক অবস্থান তীব্রভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে, যার দরুণ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। তার এমন নেতিবাচক বক্তব্যে সারাদেশের আইনজীবীবৃন্দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে এবং তারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের জন্য অবিলম্বে মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদকে জনসম্মুখে তার বক্তব্য প্রত্যাহারসহ ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনগুলো।

প্রসঙ্গত, গত ৫ নভেম্বর বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার কেদারপুরে অনুষ্ঠিত একটি সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ আইনজীবীদের সম্পর্কে বলেন, ওকালতি যারা করে, তারা কিন্তু টাউট-বাটপার। পরে তার এই বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।

আইনজীবীদের টাউট বলায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা

এদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদকে বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। একটি অনুষ্ঠানে আইনজীবীদের ‘টাউট-বাটপার’ মন্তব্য করে তাঁর দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

বিষয়টি নজরে এলে বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশাল প্রেসক্লাবে জেলা আইনজীবী সমিতি সংবাদ সম্মেলনে ফরহাদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। এ সময় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার আহ্বান জানিয়ে আইনজীবী নেতারা বলেছেন, ফরহাদকে তাঁরা কোনো আইনি সহায়তা দেবেন না।

সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি এস এম সাদিকুর রহমান বলেন, ‘ফরহাদ আইনজীবীদের কটূক্তি করে বলেছেন—“ওকালতি যাঁরা করেন, তাঁরা টাউট-বাটপার হয়।” এ বক্তব্যে সারা দেশের আইনজীবীরা ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত হয়েছেন। তাঁকে বরিশালের আইনজীবীরা কোনো আইনি সহায়তা দেবেন না।’

জানা গেছে, গত বুধবার জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলায় অনুষ্ঠানে ফরহাদ আইনজীবীদের নিয়ে এই মন্তব্য করেন। তিনি বরিশাল-৪ (মেহেন্দীগঞ্জ-হিজলা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ফরহাদ বলেন, ‘বাবুগঞ্জ উপজেলায় একটি সভায় আমি বলেছি যে আমার এলাকার একটি হত্যা মামলায় জামিন করাতে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম দুই লাখ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু ওই অ্যাডভোকেট জামিন করেননি। শ ম রেজাউলের সমালোচনা করতে গিয়ে অসাবধানবশত অ্যাডভোকেট শব্দটি উচ্চারণ করেছি। এ জন্য আমি দুঃখ প্রকাশও করেছি।’

ফরহাদ পাল্টা অভিযোগ করেন, তিনি ওই কথাগুলো বলেছেন বাবুগঞ্জে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমানের একটি সভায়। একই আসনে ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন মনোনয়নপ্রত্যাশী। জয়নুলের ষড়যন্ত্রে বরিশালের আইনজীবীরা এসব করছেন।