জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেনের বিরুদ্ধে গুরুতর দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন সম্প্রতি দল থেকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি পাওয়া কেন্দ্রীয় সংগঠক মুনতাসির মাহমুদ। তিনি দাবি করেন—দেশের বিভিন্ন জেলায় পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) নিয়োগ দিতে আখতার হোসেন ৫০ লাখ টাকা করে ঘুষ দাবি করেছেন।
শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে লাইভে এসে তিনি বিস্তারিত অভিযোগ প্রকাশ করেন। এর আগে তিনি আখতার হোসেনকে এক ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করতে আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন।
লাইভে মুনতাসির মাহমুদ বলেন— তখন তিনি ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি ছিলেন এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরে আসিফ নজরুলসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা সাংগঠনিক দায়িত্ব নেন। সে সময় সারা দেশে পিপি নিয়োগ চলছিল। নরসিংদীর শিরিন আক্তার শেলী, যিনি আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন এবং তার ছেলে গোলাম রেশাদ তমাল ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে আন্দোলনে আহত হয়েছিলেন—তার নাম প্রস্তাব করেছিলেন মুনতাসির।
তার অভিযোগ— আখতার হোসেনের ঘনিষ্ঠরা টাকা নিয়ে শিরিন আক্তারের নাম তালিকা থেকে কেটে দেন এবং অন্য এক নারীকে টাকার বিনিময়ে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। অথচ শিরিন আক্তার আন্দোলনে দীর্ঘসময় সক্রিয় ছিলেন এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ছিলেন।
মুনতাসির বলেন— আখতার হোসেন সরাসরি জানান যে, পিপি হতে হলে ৫০ লাখ টাকা লাগবে। অন্যজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে শিরিন আক্তারের নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগও তিনি করেন।
পরে মুনতাসির, তারেক ও অন্যরা আসিফ নজরুলের কাছে গিয়ে শিরিন আক্তারের আন্দোলনে ভূমিকা, নির্যাতনের ইতিহাস এবং যোগ্যতার কথা তুলে ধরেন। এরপর আসিফ নজরুল শিরিন আক্তারকে পিপি হিসেবে নিয়োগ দেন।
কিন্তু নিয়োগ পাওয়ার পরপরই, মুনতাসিরের ভাষায়— আখতার হোসেন ফোন করে শিরিনকে বলেন:
আপাকে পিপি বানিয়ে দিয়েছি, এখন ৫০ লাখ টাকা লাগবে। কাজ হয়ে গেছে, টাকা দিতে হবে।
এরপর শিরিন আপা খুশি হয়ে নিজের গাড়িতে বসে আখতারের পিএস আতিক মুন্সিকে ১ লাখ টাকা দেন। মুনতাসির দাবি করেন—এর একাধিক সাক্ষী রয়েছে।
কিন্তু এই ১ লাখ টাকা দেওয়ায় আখতার ক্ষুব্ধ হন এবং বলেন—
৫০ লাখ টাকা লাগবে। যেমন নাম দিতে পারি, তেমনি নাম কেটেও দিতে পারি।
মুনতাসির আরও জানান, এসব তথ্য প্রকাশ করায় তার নিজের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। তবুও তিনি এনসিপির অন্য দুর্নীতিবাজ নেতাদের বিরুদ্ধেও পর্যায়ক্রমে তথ্য প্রকাশের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

