রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাঞ্চন সেতুর পশ্চিম পাড় পর্যন্ত সাড়ে ২৬ কিলোমিটার বাংলাদেশে প্রথম পাতাল রেল নির্মিত হতে যাচ্ছে। এই প্রকল্পের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ সোমবার সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। অধিবেশনে এ সংক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন সরকারি দলের সদস্য (এমপি) উম্মে রাজিয়া কাজল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতু ও ঢাকা সিটিতে মেট্রোরেল। এই দুটি প্রকল্পের মধ্যে সেতু বিভাগের আওতাধীন পদ্মা সেতু প্রকল্পের ৫৫ শতাংশ ভৌত কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। আর মেট্রোরেলে কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।
জবাবে মন্ত্রী আরো জানান, যানজট নিরসনে এবং বৃহত্তর ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থাকে সুষ্ঠু, পরিকল্পিত, সমন্বিত ও আধুনিকায়নের জন্য অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মেট্রোরেল প্রকল্পটি পাঁচটি রুটের মাধ্যমে নগরবাসীকে দেওয়া হবে। এর মধ্যে ডিপো এলাকার ভূমি উন্নয়ন, পূর্ত কাজ, বিভিন্ন রুটে ভায়াডাক্ট ও স্টেশন নির্মাণ, ইলেকট্রিক্যাল এ-মেকানিক্যাল সিস্টেম, রোলিং স্টক ও ডিপো ইকুপমেন্ট সংগ্রহ, এই ছয়টি প্যাকেজ রয়েছে।
এ লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ৬ আগস্ট জাপানের কোম্পানি কাওসাকি মিতসুবিশির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ প্যাজেরে আওতায় ২৪ সেট ট্রেন, যার প্রতিটিতে ছয়টি করে কোচ থাকবে। এ কাজ ২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) এমপি বেগম লুৎফা তাহেরের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকার যানজট সমস্যা সমাধানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে ইপিজেড পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা- আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। এটি জিটুজি ভিত্তিতে নির্মাণে চীন সরকারের মনোনীত একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি হয়েছে। অর্থনৈতিক বিভাগের মাধ্যমে ঋণ প্রস্তাবটি চীন সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর যানজট নিরসনে গণপরিবহন সুবিধা সম্পন্ন সাবওয়ে বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো নির্মাণে সম্ভ্যাবতা সমীক্ষা পরিচালনার জন্য প্রকল্প অনুমোদিত এবং সমীক্ষা পরিচালনার জন্য পরামর্শক নিয়োগ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
এ ছাড়া যমুনা নদীর তলদেশে ট্যানেল নির্মাণে সরকার নিজস্ব অর্থায়নে সম্ভবতা সমীক্ষা পরিচালনার জন্য প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, গত নয়বছরে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতায় ১ হাজার কোটি টাকার ওপরে যে সব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ, ইস্টার্ণ বাংলাদেশ ব্রীজ ইমপ্রুভমেন্ট, জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক উন্নয়ন, জেলা মহাসড়ক উন্নয়নে ১০টি গুচ্ছ প্রকল্প এবং কক্সবাজার টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ প্রকল্প। এ ছাড়া সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ও ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের আওতায় আরও ২০টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে।