আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের হাতকড়া পরানোর ক্ষেত্রে আইনের অপব্যবহার করা যাবে না মর্মে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে, এ বিষয়ে (হাতকড়া পড়ানো) সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (৩ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী আবু ওবায়দুর রহমান।
তিনি বলেন, হাতকড়া পরানোর ক্ষেত্রে পিআরবির বিধান মেনে চলা উচিত। এই বিধানের বাইরে গিয়ে কাউকে হাতকড়া পরালে তা হবে মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এক্ষেত্রে আইনের অপব্যবহার করা যাবে না মর্মে হাইকোর্ট এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে হাতকড়া পরানোর ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র সচিব ও পুলিশের আইজির প্রতি সতর্কতামূলক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
২০১৭ সালের ২৬ মে ভোরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় বাসের ধাক্কায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল বেরুনি হলের মার্কেটিং বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান রানা ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের আরাফাত নিহত হন। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত বিচারের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানসহ প্রায় ৪২ জনকে আটক করে পুলিশ। নাজমুল অসুস্থ থাকায় আশুলিয়া থানা পুলিশের হেফাজতে তাকে হাতকড়া পরানো অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় হাসপাতালের বিছানার সঙ্গে হাতকড়া পড়িয়ে আটকে রাখা হয়। এমনকি খাবার সময় নাজমুল তার হাতকড়া খুলে রাখার অনুরোধ জানালেও পুলিশ সে অনুরোধ শুনেনি। এ সংক্রান্ত খবর পত্রিকায় প্রকাশ পায়।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন এস এম রেজাউল করিম। ২০১৭ সালের ২৯ মে হাইকোর্টের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, ঢাকার পুলিশ সুপার ও আশুলিয়া থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
মঙ্গলবার রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট উক্ত রায় দেন।