জমিজমা সংক্রান্ত এক মামলায় পাঁচ বছর ছয় মাস ১৬ দিন বয়সী এক শিশুকে আসামি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলা রেকর্ডের ক্ষেত্রে প্রতিস্থাপিত এজাহার ফরম ব্যবহার না করা কেন অবৈধ ও বে-আইনি ঘোষণা করা হবে না এবং ফরম ব্যবহারের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সোমবার (২৮ জানুয়ারি) এমন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে আদালত শিশুকে আসামি করার বিষয়ে রুল জারি করে আদেশ দেন।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), মতিঝিলের এসি ও ওসিকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান দুলু। তার সঙ্গে ছিলেন আকরাম হোসেন ও জামিউল হক ফয়সাল।
অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান দুলু বলেন, পুলিশের প্রবিধান অনুসারে বাংলাদেশ পুলিশ (বিপি) ফরমে এজাহার (এফআইআর) করতে হবে। সেটি ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে সংশোধন করে প্রতিস্থাপিত এজাহার ফরম তৈরি করেন তৎকালীন আইজিপি নূর মোহাম্মদ। প্রতিস্থাপিত ফরম অনুযায়ী ফরমে আসামির নাম, ঠিকানা, বাসা পিআইএল নম্বর, আসামির দৈহিক বর্ণনা অবশ্যই উল্লেখ থাকতে হবে। কিন্তু মতিঝিল থানায় ২০১৮ সালের ২০ আগস্ট মামলা রেকর্ড করার ক্ষেত্রে উক্ত প্রতিস্থাপিত এজাহার ফরম অনুযায়ী না করার কারণে পাঁচ বছর ছয় মাস ১৬ দিনের শিশুকে আসামি করা হয়েছে। যে মামলার বাদী এসএম নুরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আসামির ব্যক্তিগত পরিচিতি, তার নাম, পিতার নাম, ঠিকানা, উচ্চতা, শারীরিক গঠন, চুল, নাক, কান, কোনো (চিহ্ন) আলামত থাকলে তা উল্লেখ করতে হবে।
আইনজীবী আজিজুর রহমান আরও বলেন, এ অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত। এজাহার ফরমের নিয়ম অনুযায়ী মামলা করা হলে এ ধরনের কোনো শিশুকে আসামি হয়ে মানসিক নির্যাতনের শিকার হতো না।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিস্থাপিত এজাহার ফরমের বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করে বলেছি, একটি মামলা করার সময় আসামির বয়স, ঘটনাস্থল সব ঠিক মতো দেখে নেয়া বা এসব তথ্য সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেয়া উচিত।
আইনজীবী বলেন, প্রতিস্থাপিত এজাহার ফরম অনুযায়ী মামলার রেকর্ড করলে এফআইআরে অজ্ঞাতনামা আসামি লেখার বিষয়টি থাকতো না।