দুই ব্যবসায়ীর মধ্যে জমিজমা নিয়ে সৃষ্ট বিরোধে দায়ের মামলায় আপস না করায় এক শিক্ষানবিশ আইনজীবীকে প্রকাশ্যে মারধর ও হাতকড়া পরিয়ে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের লকআপে আটক রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জেলা সদরের শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়নের গোয়ালন্দ মোড় কাঁচাবাজার এলাকায় বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সদর উপজেলার খানখানাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মাসুদুর রহমান শিক্ষানবিশ আইনজীবী নাজমুল হককে তার ভাইয়ের জমি বিক্রির বিষয়ে দায়ের পিএমশান (অগ্রক্রয়) মামলা তুলে নিয়ে বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে বলেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই এসআই ফোনে তার অবস্থান জেনে নিয়ে সেখানে অপেক্ষা করতে বলেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে এসআই মাসুদ পুলিশ কনস্টেবল রবিউলসহ একটি মোটরসাইকেলে গোয়ালন্দ মোড় কাঁচা বাজারে পৌঁছে নাজমুলকে গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে এসআই মাসুদুর রহমান তার কোমর থেকে পিস্তল বের করে ওই ভয় দেখান এবং প্রকাশ্যে হাতকড়া পড়িয়ে মোটরসাইকেলে নাজমুলকে তুলে নিয়ে যান।
নাজমুলের পরিবারের অভিযোগ, খানখানাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নিয়েও দারোগা মাসুদ ও পুলিশ কনস্টেবল রবিউল তাকে কিল, ঘুষি, লাথি মেরে তদন্ত কেন্দ্রের লকআপে রেখে দেয়।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) মো. ফজলুর রহমানকে জানালে তার নির্দেশে প্রায় এক ঘণ্টা পর স্থানীয় জামিনদারের মুচলেকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় রাজবাড়ী পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাজমুল হক।
অভিযোগে জানা যায়, মঙ্গলবার গোয়ালন্দ মোড় কাঁচাবাজারে তার শ্বশুর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আ. সামাদ বেপারী দোকান ঘর মেরামতের সময় এসআই মাসুদ সেখানে হানা দিয়ে তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং তার দোকানের নির্মাণ সামগ্রী ফাঁড়িতে নিয়ে যান। পরদিন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) মো. ফজলুর রহমান এ বিষয়ে উক্ত দারোগাকে মোবাইল ফোনে শাসিয়ে দেন। এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই মাসুদ নাজমুলকে মারধর ও হাতকড়া পরিয়ে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে আটক রাখে।
অভিযোগের বিষয়ে এসআই মাসুদ বলেন, দুপক্ষের বিরোধের কারণে নাজমুলকে আটক করে পরিস্থিতি শান্ত করতে হয়। এর চেয়ে বেশি কোনো কথা বলতে তিনি অপারগতা জানান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফজলুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটি দুজনের মধ্যে একটি ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা। এটি মিটে গেছে।