আগামী মাসেই মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের ঘটনায় আন্তর্জাতিক আদালতে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার শুনানি শুরু হবে। সোমবার এক বিবৃতিতে ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছে, আগামী ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে এ গণহত্যা মামলার শুনানি শুরু হবে। রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের ঘটনায় এটিই প্রথম কোনও আন্তর্জাতিক আইনি উদ্যোগ।
এএফপি-র বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ফ্রান্স ২৪।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। খুন, ধর্ষণ, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের বাস্তবতায় জীবন ও সম্ভ্রম বাঁচাতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা। নৃশংস এ বর্বরতাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে গত ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)-এর কাছে বিচার চায় গাম্বিয়া। ৫৭টি মুসলিম দেশের সংগঠন ওআইসি-এর পক্ষ থেকে এই মামলা দায়ের করে গাম্বিয়া।
মামলায় বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা চালিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এটি ১৯৪৮ সালের ইউএন জেনোসাইড কনভেনশনের লঙ্ঘন। গাম্বিয়া চাইছে, রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে আইসিজে যেন জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়।
জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর মধ্যকার বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৬ সালে আইসিজে প্রতিষ্ঠা করা হয়। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে এর সদর দফতর অবস্থিত।
এছাড়া রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের ঘটনায় আইসিজে-এর বাইরে সম্প্রতি আর্জেন্টিনাতেও একটি মামলা হয়েছে। গত ১৩ নভেম্বর এ বর্বরোচিত নৃশংসতায় জড়িত থাকার মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী ও দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি-র বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এটি দায়ের করে। এতে আসামি করা হয়েছে সুচি এবং মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ দেশটির কয়েকজন শীর্ষ সামরিক ও রাজনৈতিক নেতাকে। বলা হয়, অভিযুক্তদের কারণে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে।
‘সর্বজনীন এখতিয়ার’ নীতি মেনে এ মামলা দায়ের করা হয়। এই নীতি মেনে, বিশ্বের যে কারও বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধের ক্ষেত্রে মামলা দায়ের ও বিচারকাজ চালাতে পারে যে কোনও রাষ্ট্র বা আন্তর্জাতিক সংগঠন।