জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) জন্য কেনা অত্যাধুনিক আর্টিফিশিয়াল রেসপিরেটরি ভেন্টিলেটর দীর্ঘ দিন ধরে অবহেলায় ফেলে রাখায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে অবহেলার বিষয়টি তদন্ত করতে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি সম্প্রতি অবসরে যাওয়া প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ড. মোয়াররফ হোসেনের অবসরকালীন পেনশন সুবিধা স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
অবহেলায় পড়ে আছে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউটের অত্যাধুনিক আর্টিফিশিয়াল রেসপিরেটরি ভেন্টিলেটরি শিরোনামে দ্যা ডেইলি স্টারে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক ও এম এমদাদুল হক।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ১২ বছর আগে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) জন্য আটটি অত্যাধুনিক আর্টিফিশিয়াল রেসপিরেটরি ভেন্টিলেটর (এআরভি) মেশিন কেনা হয়েছিল। আইসিইউয়ের জন্য অতি প্রয়োজনীয় এই যন্ত্রগুলোর প্রত্যেকটি ৭০ লাখ টাকায় কেনা হলেও আশ্চর্যজনকভাবে একবারের জন্যও সেগুলো ব্যবহার করা হয়নি। আইসিইউয়ের ভেতরে এক কোনায় অযত্নে ফেলে রাখা হয়েছে যন্ত্রগুলো। এখন হাসপাতালটির আইসিইউতে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা নেই।
অক্সিজেন সরবরাহের জন্য হাসপাতালটিতে একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা তিন বছর আগে চালু হলেও ভেন্টিলেটরগুলো এখনও বসানো হয়নি। আরও খারাপ খবর হলো, এর মধ্যেই ভেন্টিলেটরগুলোর মাদারবোর্ড চুরি হয়ে গেছে। ফলে এ যন্ত্রগুলো এখন পুরোপুরি অকেজো।
রাজধানীর একমাত্র সরকারি ক্যান্সার হাসপাতালে এরকম আরও নানা অনিয়মের সন্ধান পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশের অসচ্ছল ক্যান্সার রোগীদের একমাত্র ভরসা জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। ক্যান্সার নিয়ে গবেষণাকারী একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার ২০১৮ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৮ হাজার মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এছাড়াও, প্রতিবছর আরও প্রায় দেড় লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন।