অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষীকে ফের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। তারা হলেন- টেকনাফের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াছ।
আজ মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) দুপুর ১২টায় জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম (কক্সবাজার সদর-৪) তামান্না ফারাহ এর আদালত এ আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাবের সিনিয়র এএসপি খাইরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত অনেক দূর এগিয়ে গেছে। সব আসামি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তবে এটি একটি স্পর্শকাতর মামলা হিসেবে যৌথ ও আলাদা করে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে তাই সবার বিরুদ্ধে পুনরায় রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। এর আগে গত ২০ আগস্ট মামলার উল্লেখিত আসামিদের প্রথম দফায় ৭ দিনের রিমান্ড শেষ হয়েছিল।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে ‘গাড়ি তল্লাশিকে’ কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে র্যা বের একটি দল টেকনাফের মারিশবুনিয়া এলাকা থেকে গত ১০ আগস্ট পুলিশের দায়ের করা মামলার এ সাক্ষীকে গ্রেফতার করেছিল। পরদিন তাদের আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ১২ আগস্ট ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এছাড়া এই ৩ আসামিকে গত ১৪ আগস্ট র্যাব হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া হয়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গত ২০ আগস্ট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে মঙ্গলবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের আদালতে তুলে পুনরায় ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে শুনানি শেষে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় দুটি ও রামু থানায় একটি মামলা করে। গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। এতে ৯ জনকে আসামি করা হয়।
আসামিরা হলেন- বরখাস্ত হওয়া টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, এএসআই লিটন মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. মোস্তফা ও এসআই টুটুল। এদের মধ্যে আসামি মোস্তফা ও টুটুল পলাতক রয়েছেন।
এ মামলায় এই পর্যন্ত সাত পুলিশ সদস্য, এপিবিএনের তিন সদস্য ও টেকনাফ পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীসহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।