রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-৩

এবার দুই দিনেই ধর্ষণ মামলার বিচার শেষ করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন

রংপুরে মাত্র দুই কার্য দিবসের শুনানিতেই একটি ধর্ষণ মামলার বিচার কাজ শেষ করে রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। মামলায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-৩ এর বিচারক মোস্তফা পাভেল রায়হান মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) এ রায় প্রদান করেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এত দ্রুত ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণার বিরল দৃষ্টান্ত এটি।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার একটি গ্রামে বিয়ের আশ্বাসে বাদীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন নিকটাত্মীয় মোস্তাফিজার রহমান। এসময় পর পর তিন দিন তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কের ঘটনা ঘটে। তবে এরপর ওই নারীকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় মোস্তাফিজার।

এ ঘটনায় কাউনিয়া থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নালিশি মামলা দায়ের করেন ওই নারী। বিচারক বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে আদেশ দেন।

পিবিআই তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। আদালত আসামি মোস্তাফিজার রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। পরবর্তীতে আসামি হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেয়।

চলতি বছরের ২ সেপ্টেম্বর আদালত আসামির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চার্জ গঠন করে ২৩ নভেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন। সোমবার মামলার বাদীসহ ৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হলে আজ মঙ্গলবার আদালত মামলার যুক্তি-তর্ক প্রদর্শন ও রায়ের দিন ধার্য করেন।

গতকাল মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) বেলা সাড়ে এগারটায় সরকার পক্ষের ও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি-তর্ক শুনানির পর বিকেলে রায়ের সময় ঘোষণা করেন বিচারক। পরে বিকেল পৌনে ৫টায় বিচারক আসামি মোস্তাফিজার রহমানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করে রায় পড়ে শোনান।

আদালত কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রইচ উদ্দিন বাদশা বলেন, তারা ন্যায়বিচার পেয়েছেন। সেই সঙ্গে মাত্র দুই কার্য দিবসেই শুনানি শেষ করে মামলার বিচার সম্পন্ন করায় বিচারককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করা গেলে অপরাধ প্রবণতা কমে যাবে।

অন্যদিকে সরকার পক্ষের আইনজীবী রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মাকজিয়া হাসান বলেন, দুই দিনেই বিচার শেষ করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন বিচারক। রায় সম্পর্কে তিনি বলেন, মামলার বাদী তার সাক্ষ্য ঠিকমতো দিতে পারেননি। মামলা প্রমাণিত না হওয়ায় বিচারক আসামিকে খালাস দিয়েছেন।