কথা রাখলেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নির্বাচনের আগেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে প্রথম দিনই ট্রাম্পের জারি করা মুসলিম নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবেন তিনি।
সে অনুযায়ী, হোয়াইট হাউজে প্রথম কর্মদিবসেই সাত মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছেন বাইডেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
২০১৭ সালে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের কিছু দিন পরই সাতটি মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন ট্রাম্প। পরে সেটি মুসলিম নিষেধাজ্ঞা হিসেবে পরিচিত হয়। তবে হোয়াইট হাউজে অভিষেকের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্পের মুসলিম নিষেধাজ্ঞা বাতিলের নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন জো বাইডেন।
এদিন মোট ১৭টি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বেশ কিছু নীতি বিতর্কিত নীতি বদলে দিয়েছেন বাইডেন। ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে অপচয় করার মতো কোনও সময় হাতে নেই। আমি আমেরিকার মানুষকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন শুরু করতে যাচ্ছি।’
জো বাইডেন যে ১৭টি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন তার তিনটিই করোনাভাইরাস মোকাবিলার বিষয়ে। দুইটি মার্কিন অর্থনীতি নিয়ে। এর বাইরে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে আছে জলবায়ু পরিবর্তন ও অভিবাসন।
৩০ দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে ফের প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফেরানোর নির্বাহী আদেশেও স্বাক্ষর করেছেন তিনি। আরেক আদেশে কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা তথা সমতা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।
মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে তহবিলের জন্য ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ডিক্লারেশন বাতিল করেছেন। অর্থাৎ, সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের কাজ স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে হোয়াইট হাউজে দেওয়া অভিষেক ভাষণে পূর্বসূরী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ কিংবা ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির মর্মমূলে আঘাত হানেন বাইডেন। দরিদ্র শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের ভোট জিততে বিভক্তির সূত্রে ট্রাম্প তাদের বিপরীতে শত্রু হিসেবে দাঁড় করিয়েছিলেন মুসলিম অভিবাসী আর মেক্সিকানদের।
শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের সেই বিদ্বেষী রাজনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে বাইডেন বলেছেন, আমেরিকার ইতিহাসে বারবার বিভক্তির বিপরীতে ঐক্য জিতেছে। আজ জানুয়ারির এই দিনে আমার সমস্ত আত্মাজুড়ে রয়েছে: আমেরিকাকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, আমাদের জনগণের ঐক্য গড়তে হবে আর জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।’
সূত্র: আল জাজিরা, সিএনএন।