ঢাকার কেরানীগঞ্জে ভাড়া দিতে না পারায় চলন্ত বাস থেকে বাকপ্রতিবন্ধী নারী যাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়ার ঘটনায় ‘এন মল্লিক’ পরিবহনের বাসচালক মো. সবুজ (২৫) ও হেলপার মো. নাহিদ (১৯) দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
শনিবার (১৩ মার্চ) দুই দিনের রিমান্ড শেষে তাদেরকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তারা স্বেচ্ছায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আশরাফ উজ জামান তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এর আগে বুধবার (১০ মার্চ) এই আসামিদের ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় তাদের বিরুদ্ধে করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফায়রুস তাসনিম প্রত্যেকের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মঙ্গলবার (৯ মার্চ) সকালে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব। এ গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাব-১০ এর মেজর শাহরিয়ার জিয়াউর রহমান।
তিনি বলেন, কেরানীগঞ্জের কুটিয়ামাড়া এলাকা থেকে রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় বাসটিও জব্দ করা হয়।
গত ৭ মার্চ কেরানীগঞ্জের রোহিতপুর বাজার এলাকায় ওই প্রতিবন্ধী নারীকে বাস থেকে ফেলে দেয়া হয়। এরপর ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ওইদিন সকাল পৌনে নয়টার দিকে এন মল্লিক নামের একটি বাস থেকে ছুড়ে ফেলা হয় বোরকা পরা ওই নারীকে। মাটিতে পড়ে তিনি অস্ফুট স্বরে গোঙাচ্ছিলেন। পরে স্থানীয় লোকজন গিয়ে তাকে মাটি থেকে তোলেন। ভিডিও চিত্রেই দেখা যায়, গাড়ির নম্বর ঢাকা মেট্রো ব-১৩-১৫২১। এন মল্লিক বাসটি গুলিস্তান-নবাবগঞ্জ রুটে চলাচল করে।
স্থানীয়রা জানায়, বাকপ্রতিবন্ধী ওই নারী তাকে বাস থেকে ছুড়ে ফেলে দেয়ার কারণ টাইলসের উপর লিখে জানিয়েছেন। সেখানে ওই নারী লিখেছেন, ‘এন মল্লিক কোনাখোলা থেকে উঠাইছে। ভাড়া নাই। এন মল্লিক কোনোদিনও আমার থেকে ভাড়া নেয় না। এরা ভাড়া চায়। দিতে না পারায় এমন ব্যবহার। এন মল্লিকের সবাই আমাকে চেনে। ও মনে হয় চিনে নাই। তাই বুজাবার চেষ্টা করছিলাম।’