দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২২-২৩ মেয়াদের নির্বাচনে শীর্ষ দুই পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন দুই নারী আইনজীবী। নির্বাচনের জন্য গঠিত কমিশন থেকে প্রকাশ করা বৈধ প্রার্থীদের তালিকা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
আওয়ামী সমর্থিত সাদা প্যানেলের বাইরে গিয়ে সভাপতি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ক্ষমতাসীন দল সমর্থক আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। অন্যদিকে সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যূথী, তিনিও আওয়ামী ঘরানার আইনজীবী।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন: ১৪ পদে ৩৪ জনের প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শীর্ষ পদে কোন নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। এ বিষয়ে তানিয়া আমীর বলেন, ‘সম্ভবত এই প্রথম সভাপতি পদে একজন নারী প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছি। নির্বাচনে অবশ্যই বিজয় হবে- এমনটাই প্রত্যাশা করছি।’
আসন্ন নির্বাচনে সরকার সমর্থক বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সাদা প্যানেল থেকে সভাপতি পদে সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির, সম্পাদক পদে আবদুন নূর দুলালকে প্রার্থী করা হয়েছে।
ব্যারিস্টার তানিয়া আমীরের অভিযোগ, যে প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে, সেটি জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে করা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘অনেকেই আছেন যারা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোটার না, অনেকেই আছেন তারা ঢাকা বারের সদস্য, অথচ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে কারা নির্বাচন করবেন, তারা নির্ধারণ করে দেন। এটা হতে পারে না।’
তানিয়ার অভিযোগ, ‘যারা প্যানেল গঠন করে দিয়েছেন তারা এখানকার ভোটার না। অনেকের সরকারি পদে থাকায় তার ভোটাধিকার স্থগিত করা আছে। অথচ তারা নির্ধারণ করে দিচ্ছেন, এখানে কারা নির্বাচন করবেন। এটা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা মেনে নিচ্ছেন না। এ কারণেই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি।
নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী এই আইনজীবী বলেন, আশা করছি ভোটারদের অভূতপূর্ব সাড়া পাব। নির্বাচিত হয়ে সুপ্রিম কোর্ট বারের মর্যাদাকে আরও উঁচু জায়গায় নিয়ে যেতে চাই। যার ফলে আইনজীবীরা এটাকে নিয়ে গর্ববোধ করবেন।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি বলেন, সম্পাদক পদে মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছিলাম। আলোচনা করে সমঝোতার ভিত্তিতে আমাকে না দিলেও কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু আলোচনায় ওঠার আগেই আমার নামটা কেটে দেয়া হয়েছে। এটাতে আমার মনে হয়েছে আমার অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সিনিয়র আইনজীবী ও আইনজীবী নেতৃবৃন্দ আমাকে চায়। তাদের কাছে আমি দায়বদ্ধ। সে জন্য আমি প্রার্থী হয়েছি। বড় কোনো ষড়যন্ত্র না হলে আশা করি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।’
প্রসঙ্গত, ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার এম. আমীর উল ইসলামের মেয়ে। অপরদিকে অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যূথী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী। অ্যাডভোকেট যুথি মনোনয়ন বোর্ডের কাছে অভিযোগ করেছেন ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে তার নাম সম্পাদক প্রার্থীর তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামী ১৫ ও ১৬ মার্চ দুইদিন ব্যাপী এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। মাঝে দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত একঘণ্টার বিরতি থাকবে। প্রতিবারের মতো এবারো ১৪টি পদে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে সম্পাদকীয় পদ ৭টি এবং সদস্য পদ ৭টি।