আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা যেকোনো দেশের উন্নয়নের পূর্বশর্ত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ সোমবার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর রাজারবাগে মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনসে পাঁচ দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। এবার পুলিশ সপ্তাহ পালন হচ্ছে ‘জঙ্গি ও মাদকের প্রতিকার, বাংলাদেশ পুলিশের অঙ্গীকার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, কোনো দেশের উন্নয়নের পূর্বশর্ত হলো স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। শান্তিপূর্ণ ও উন্নয়নমুখী দেশ গড়তে সরকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। পুলিশের জনবল বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে। পৃথিবীর কোনো দেশে এতো বেতন-ভাতা দেওয়া হয় কি-না, আমার জানা নেই। এছাড়া, তাদের রেশন ও চিকিৎসা সেবারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিরাট ভূমিকা রেখেছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।
প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা তৈরির আহ্বান জানিয়ে বলেন, মানুষ খুন করে যারা মনে করেন, বেহেশতে যাবেন, তারা কোনোদিনই সেখানে যেতে পারবেন না। আর বাংলাদেশের মাটিতে কোনো জঙ্গি, সন্ত্রাসী, যুদ্ধাপরাধীর জায়গা হবে না। এ দেশ থেকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নির্মূল করে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা হবে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘এজন্য তৃণমূল পর্যায় থেকে জনপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আমরা চাই বাবা-মা তাদের সন্তানদের খোঁজ রাখবেন, তারা কোথায় যায়, কী করে সেদিকে নজর রাখবেন। শিক্ষকরা তাদের শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে খোঁজ রাখবেন। জনসংশ্লিষ্টতা থাকলে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ অবশ্যই সম্ভব।’
তিনি রোহিঙ্গা সংকটে পুলিশ বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, মিয়ানমারে অত্যাচারিত প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ তাদের নিরাপত্তা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দিয়ে যাচ্ছে।
‘অর্থপাচার ও সাইবার অপরাধ প্রতিহত করতে প্রযুক্তিগত দিক থেকে পুলিশ সদস্যদের দক্ষ হতে হবে। এজন্য তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশে-বিদেশে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এবং এটি অব্যাহত ধাকবে। এটিকে আমরা ব্যয় মনে করি না, এটিকে মনে করি বিনিয়োগ।’
পুলিশে বেশ কয়েকটি বিশেষায়িত ইউনিট গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা সন্ত্রাসবাদ রুখতে কাজ করে যাচ্ছে।
পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) ও আইজিপিএস ব্যাজের জন্য মনোনীত কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, সফলতার জন্য আপনারা যখন পদক পাবেন, তখন প্রতিটি কাজের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি পুলিশ সদস্য অসহায় মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়াবেন। জনগণের প্রতি নিজেদের জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
নগর প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম