মো. সাইফুল ইসলাম:
“আসামী ল্যাংড়া বাবুল হাজির”-এজলাসে পেশকারের এই ডাক শুনে একটু নড়েচড়ে বসলাম। লেগ স্ট্রেচারের খট খট শব্দে সকলের দৃষ্টি বাবুলের দিকে স্থির হলো। দাড়িওয়ালা হালকা-পাতলা গড়নের লোকটির কোমরের লুঙ্গির ভাঁজে কিছু একটা চক চক করছিল। জিজ্ঞেস করলে জানালেন স্বচ্ছ পলিথিনে মোড়ানো কাগজগুলো তার মামলার। সাথে আছে ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পরিচয়পত্র’ যা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত।
ঘটনাটা সম্ভবত ২০১৯ সালের। প্রতিবন্ধী বাবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি তার মুদির দোকানে বসে ব্যবসার আড়ালে গাজার পুরিয়া বিক্রি করেন। পুলিশ তার দোকানে অভিযান চালিয়ে ২৫০ গ্রাম গাজা উদ্ধার করেছেন। যতটুকু মনে পড়ে তার বাড়ী ছিল রাজশাহী জেলার মধ্যে সবচেয়ে মাদকপ্রবণ এলাকা গোদাগাড়ী থানায়। তার পরিচয়পত্র নিয়ে মামলার সাথে মিলিয়ে দেখলাম। পরিচয়পত্রে ‘ল্যাংড়া’ শব্দটি নেই। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানলাম এনআইডি কার্ডেও এমন বিকৃত কোনো শব্দ নেই।
শুধু বাবুল নয়, বাবুলের মত অনেক প্রতিবন্ধী, সাধারণ মানুষ, নারী ও শিশুরাও এমন বিকৃত নাম প্রাপ্তির শিকার হয়েছেন। এজাহার, অভিযোগপত্রে ‘ল্যাংড়া বাবুল’ এর মত এরূপ নাম দেখলে স্বাভাবিকভাবে ‘ল্যাংড়া মামুন’, ‘পিচ্চি হান্নান’, ‘কালা জাহাঙ্গীর’, ‘মুরগি মিলন’দের মত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কথা মনে পড়ে যায়। কিন্তু আমি যে মামলাগুলো পেলাম তার অধিকাংশই ছোট খাটো অপরাধের আসামী। অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় এই অপরাধগুলো যদি প্রমাণিতও হয় তাহলে তাদের সাজা হবে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড।
আসামী বাবুলের মামলাটির পর পরবর্তীতে এ বিষয়ে গভীর মনোযোগ দিলাম। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই দেখলাম মারামারি, মাদক সেবন, চুরি সহ বেশ কয়েকটি মামলায় কোনো কোনো আসামীর নাম অভিযোগপত্রে মূল নামের পাশে ওরফে লেখা আছে ‘হাতকাটা জব্বার’, ‘কানকাটা রমজান’, ‘গলাকাটা মোশারফ’, ‘কানা হামিদ’, ‘টেরা বাবু’, ‘জঙ্গী সাইফুল’, ‘কালঠা বুলবুল’, ‘ল্যাংড়া মফি’, ‘মাইনুদ্দীন শয়তান’, ‘বুলু চোর’, ‘চিটার বাবু’, ‘হেরোইন সম্রাজ্ঞী’ ইত্যাদি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হলো আসামী মানেই যেন ঘৃণার পাত্র, যা খুশী লেখা যায়।
আরো দেখলাম, এগুলোর প্রতিটি মামলাই জিআর মামলা যার বাদী রাষ্ট্র। এই মামলাগুলোর অধিকাংশ মামলা আবার মাদক ও চুরির। আমাদের দেশে মাদকের অধিকাংশ মামলাতেই সাজা হয়। আমার নিজের আদালতেও তাই। অপরাধীর অপরাধের দরুন শাস্তি যেমন প্রাপ্য, ঠিক তেমনি তার কিছু অধিকারও আছে। সেই অধিকার কুমিরের মায়া কান্না নয়, বরং দেশের সংবিধান, প্রচলিত আইন ও আন্তর্জাতিক সনদ দ্বারা স্বীকৃত।
খোজ নিয়ে জানলাম, শুধু রাজশাহীতেই নয়, সারা বাংলাদেশের চিত্র মোটামুটি একইরকম। সম্প্রতি কুড়িগ্রামে এমন দু’টি মামলা পেয়েছি। দু’টি মামলার মধ্যে একজন আসামীর নাম ‘মফেল ডাকাত’। যার নামের সাথে ‘ডাকাত’ শব্দটি আছে তার বিরুদ্ধে ডাকাতির কোনো মামলা নেই, আছে শুধু একটি স্বল্প পরিমানে মাদকের মামলা। এজাহার, অভিযোগপত্রে পূর্ব থেকেই চোর-ডাকাত, জঙ্গি এরকম নাম দেওয়া মানে তাদের বিচারের পূর্ব থেকেই দোষী হিসেবে গণ্য করার নামান্তর। এভাবে তাদেরকে সামাজিকভাবে হেয় করে কলঙ্কিত করা হয়।
এছাড়া সেই সময় পশু -পাখির নাম জুড়ে দেওয়া মামলাও পেয়েছিলাম। যে আসামীর নাম ‘বাঘা’ তিনি মনে মনে খুশীই হন, কিন্তু যার নাম ওরফে কাউয়া, পেচা, মুরগি, ব্যাঙ, শিয়াল তার কেমন লাগে সেটা কেউ ভেবে দেখেন না। অথচ এই নামগুলো কারোই পারিবারিক নাম নয়। প্রত্যেকের বাবা-মা আদর করে, কারো কারো অনুষ্ঠান করে একটি নাম দিয়েছিলেন। সেই নাম প্রথমে এলাকার লোক বিকৃত করেছেন। তারপর সেই নামই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা এজাহার, অভিযোগপত্রের মত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কাগজে সন্নিবেশ করছেন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে একই আসামী যখন এজাহারকারী হয়ে মামলা করেন তখন আর বিকৃত নাম থাকে না। নালিশী মামলাগুলোতেও তেমন একটা চোখে পড়ে না।
এজাহারকারী বা তদন্তকারী অফিসারের একবার লিখেই শেষ। কিন্তু আদালতকে বার বার পড়তে হয়, সাক্ষীদের মুখ থেকে শুনে লিখতে হয়। নিযুক্তীয় আইনজীবী, পেশকার, মোহরার সবাইকে এই মন্দ নাম উচ্চারণ করতে হয়। এসব লিখতে লিখতে শুনতে শুনতে আমাদেরও বিবেক যেন আজ কানা ও ল্যাংড়া হয়ে গিয়েছে। এটা বন্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করি না কেউই। অথচ, কোনো ধর্ম, সংস্কৃতি ও দেশ-বিদেশের আইন এটাকে সমর্থন করেনা।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে কাউকে উপহাস করতে, একে অপরকে দোষারোপ করতে এবং মন্দ নামে ডাকতে নিষেধ করেছেন [ সুরা হুজুরাত, আয়াত: ১১]। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এরূপ ব্যঙ্গ নামে ডাকা মারাত্মক গুনাহের কাজ। যারা এটি করে তওবাহ করেন না তাদেরকে ঐ একই আয়াতে ‘জালেম’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাহলে কী আমরা এই মামলাগুলোয় এসব বিকৃত নামের প্রয়োগ করে, উচ্চারণ করে প্রতিনিয়ত পাপাচারে লিপ্ত হচ্ছি!
এবার আসি আইনের কথায়। নামের বিকৃত প্রয়োগ আমাদের পবিত্র সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী হওয়ায় সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি হাইকোর্টে রীট করতে পারেন। নামের খামখেয়ালী প্রয়োগ ‘মিসক্যারেজ অব জাস্টিস’ এর জন্ম দেয়, জাহালমের মত ঘটনার সৃষ্টি হয়। দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা আবু সালেহের পর ‘ওরফে’ দিয়ে জাহালমের নাম যুক্ত করেছিলেন। এই ‘ওরফে’ কেলেংকারিতে তাকে বিনা অপরাধে প্রায় তিন বছর কারাভোগ করতে হয়েছিল। এটি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক যে, এ ধরনের মামলাগুলোয় সম্প্রতি হাইকোর্ট ক্ষতিপূরণের আদেশ দিচ্ছেন। যতটুকু মনে পড়ে ২০১৭ সালে মাননীয় বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এরূপ বিকৃত নামে মামলা দায়েরের ব্যাপারে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। একটা আদেশও দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে সেই আদেশ দেশের সকল আদালতে পাঠানো হয়েছিল এবং থানায় যাতে এ রকম নামের মামলা বা এজাহার গ্রহণ না করা হয়, সে জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব এবং পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
সাধারণভাবে পেনাল কোডের একবিংশ অধ্যায়ের অধীন এরূপ বিকৃত নামের প্রয়োগ স্পষ্টভাবে মানহানি। ফৌজদারি প্রতিকারের পাশাপাশি দেওয়ানী আদালতে আশ্রয় নেয়ার সুনির্দিষ্ট কোনো আইন না থাকলেও টর্ট আইনের বলে ক্ষতিপূরণের মোকদ্দমা করা যায়। এছাড়া প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ অনুসারে প্রতিবন্ধীদের সর্বক্ষেত্রে সমান আইনী স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। উক্ত আইনের ১৬ ধারানুসারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা কোনো প্রকারের বৈষম্য প্রদর্শন বা বৈষম্যমূলক আচরণ করতে পারবে না। উক্ত আইনের ৩৭ (৪) ধারায় কোনো ব্যক্তির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির বা তার প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে নেতিবাচক, ভ্রান্ত ও ক্ষতিকর ধারণা প্রদান বা নেতিবাচক শব্দের ব্যবহার বা ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যঙ্গ করাকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এভাবে প্রতিকারের পথ থাকলেও জেলা পর্যায়ে একজন সাধারণ নাগরিকের পক্ষে এগুলোর প্রয়োগ দুঃসাধ্য ও বাস্তবতা বিবর্জিত।
তাছাড়া বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদ, মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রসহ বিভিন্ন কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে। মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ৫ ধারাতেও বলা আছে কারো প্রতি নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরন করা যাবে না। ফলে এসব বৈষম্যমূলক আচরণ নিরসনের জন্য রাষ্ট্রীয় বাধ্যবাধকতাও রয়েছে।
শুধু তাই নয় শিশুদের ক্ষেত্রেও এলাকায় প্রচলিত এরূপ ব্যঙ্গ নাম লেখার নজীর আছে। অথচ শিশু অধিকার সনদে একজন শিশুর জন্মের পরপর নামের অধিকার স্বীকৃত হয়েছে। এই সনদের অনুচ্ছেদ ৮ অনুসারে শিশুর জাতীয়তা, নাম এবং পারিবারিক সম্পর্ক, আইনসম্মত পরিচিতি রক্ষায় শিশুর অধিকারের প্রশ্নটিকে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র সংরক্ষণ করবে৷ সেখানে কোনো বেআইনী হস্তক্ষেপ করা চলবে না৷ কোথাও কোনো শিশু তার নিজস্ব পরিচয় থেকে যদি আংশিক অথবা সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে বঞ্চিত হয় তাহলে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেই পরিচয় পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে এবং শিশুকে রক্ষার ব্যবস্থা করবে৷
একজন ব্যক্তি যত বড় অপরাধীই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে বিকৃত নামে মামলা হতে পারে না। কোনো অবস্থাতেই একজন এজাহারকারী এজাহারে বা তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে এ ধরনের মানহানিকর ও বৈষম্যমূলক আচরণ করতে পারেন না।
কিন্তু ২০২০ সালে একের পর এক এমন মামলা পেয়ে কী করা যায় তা নিয়ে ভাবনায় পড়ে গেলাম। দু’একটা শোকজ করে বিষয়টি ঠেকানো যাবে না। তাই একটু বড় পরিসরে কাজ করার কথা ভেবে বিষয়টি নিয়ে সিজেএম ইকবাল বাহার স্যারকে জানালাম। তিনি আমাকে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্সে এ বিষয়ে কথা বলার সুযোগ দিলেন। পরের কনফারেন্সে মামলার নম্বর ধরে ধরে কথা বললাম। দেখলাম, বিষয়টি অনেকের কাছে তুচ্ছ ও গুরুত্বহীন। এজন্য সংশ্লিষ্ট সার্কেল এএসপিদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে কথা বললাম।
তাদের যুক্তি ছিল আসামী সনাক্তকরণের জন্য স্থানীয় প্রচলিত নাম ব্যবহার করা হয়। এটা নাকি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। কিন্তু এখন প্রাপ্তবয়স্ক সকলের জাতীয় পরিচয়পত্র হয়েছে, শিশুদের জন্যও রয়েছে জন্ম নিবন্ধন সনদ। ফলে সেই যুক্তিও ধোপে টিকে না। আমি ২/১ জনের এনআইডি কার্ড মিলিয়ে দেখেছি। সেখানে তাদের এনআইডি’র সাথে মামলার নামের মিল নেই। ছুটির দিনগুলোতে হলিডে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে এমন মামলা পেলে তাৎক্ষণিকভাবে তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে ফোন দিয়েছি যেন অভিযোগপত্রে এমন বিকৃত নাম না দেয়া হয়। এভাবে রাজশাহীতে সে সময় এটার সামান্য হলেও একটা প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছিলাম।
গত বছর একটি জেলার আইনজীবী সমিতির দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় এক পক্ষ এক আসামীর নামের সাথে নাম দিয়েছিলেন ‘জঙ্গী’। উক্ত জেলার কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেই নামে মামলা দায়েরে অস্বীকৃতি জানান। পরে নাম সংশোধন করার পর মামলা রুজু হয়। মনে মনে বললাম, সারাদেশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা যদি এমন হতো! আশা করা স্বাভাবিক, কিন্তু বাস্তব বড় কঠিন।
তাহলে সমাধানের পথ কী? সমাধান খুব সহজ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের একটি সাধারণ আদেশ দেওয়া কঠিন কিছু নয়। আইজিপি’র এমন একটি প্রশাসনিক আদেশ হাজারো মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারে। এনআইডি কার্ড, জন্ম নিবন্ধন সনদ, স্কুল সার্টিফিকেট, কোনো পরিচয়পত্র মামলার নামের প্রাথমিক ভিত্তি হতে পারে। এগুলো না পাওয়া গেলে পরিবারের দেয়া নাম দিতে হবে। আসামী সনাক্তকরণের স্বার্থে তদন্তকারী কর্মকর্তারা তাদের ব্যক্তিগত কেস ডায়েরিতে প্রচলিত নাম সংক্রান্ত নোট দিতে পারেন। বিচারকালে কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হলে যেন সেটি দেখে তিনি জবাব দিতে পারেন। এছাড়া পুলিশ প্রশিক্ষণ একাডেমি বা ইন-সার্ভিস পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারগুলোতে মানবাধিকার বিষয়ক প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করতে হবে।
একজন মানুষের বাবা-মায়ের দেয়া নাম হচ্ছে তার সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ। কাউকে বিকৃত বা ব্যঙ্গ নামে ডাকা বা লিখা মানুষের জন্য অত্যন্ত অপমানজনক এবং মারাত্মক কষ্টের যা একমাত্র ভুক্তভোগীরাই বুঝে। এরূপ আচরণ তাকে হীনমন্যতায় ভোগায় এবং অপরাধপ্রবণ করে তুলে। তাই একজন মানুষ যত বড় অপরাধীই হোক না কেন তাকে ডাকতে হবে সম্মানের সঙ্গে, মর্যাদা দিয়ে। তার শাস্তি হোক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে, বিচারের পূর্বে অন্য কোনভাবে নয়।
পুনশ্চ, বিচারে আসামী ‘ল্যাংড়া বাবুল’দের কেউ হয়তো শাস্তি পাবেন, কেউবা নির্দোষ বিবেচনায় খালাস পাবেন। কিন্তু একটি সরকারি কাগজে লিখিত তার এই ব্যঙ্গ নাম কি মুছে ফেলা যাবে?
বি.দ্র. লেখার শুরুতে বাবুলের ঘটনাটি সত্য হলেও অনেক চেষ্টা করেও পুরোনো মামলাটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই ‘ল্যাংড়া বাবুল’ ছদ্মনাম দিয়েই লেখা হয়েছে।
লেখক: মো. সাইফুল ইসলাম, বিচারক (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ), প্রাবন্ধিক ও আইনগ্রন্থ প্রণেতা।