ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে শ্রমিকদের পাওনা টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলেন- সভাপতি কামরুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ।
আজ বুধবার (৬ জুলাই) ডিবির গুলশান গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) এসএম রেজাউল হক রেজা তাদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডিবির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জানান, গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষ এবং আইনজীবী ও টেলিকম সিবিএ নেতার যোগসাজশে তড়িঘড়ি করে শতাধিক মামলা থেকে গ্রামীণ টেলিকমকে ইনডেমনিটি দেওয়ার জন্য বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় গ্রামীণ টেলিকম কর্মচারী ইউনিয়নের দুইজন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।
এডিসি সএম রেজাউল হক রেজা আরও বলেন, গত ৪ জুলাই গ্রামীণ টেলিকম কর্মচারী এবং টেলিকম ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান মিরপুর মডেল থানায় এ সংক্রান্তে একটি মামলা দায়ের করেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেক্রমে ডিবি-গুলশান বিভাগ মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায়।
এর আগে, রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেন গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক আখতারুজ্জামান। মামলাটির তদন্ত করছে ডিবির গুলশান টিম।
অভিযোগ করা হয়েছে, বিভিন্ন সময় গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে শ্রমিকরা পাওনা আদায়, দাবি দাওয়াসহ মোট ১৯০টি মামলা করে। এসব মামলা তুলে নেয়ার জন্য আইনজীবীর মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকার অফার দেয় টেলিকম কর্তৃপক্ষ। এক পর্যায়ে মামলা তুলে নেয়া, কোম্পানিকে দায়মুক্তি, নিজেরা চাকরি থেকে অব্যাহতি এবং ইউনিয়ন বিলুপ্ত করবে— এসব শর্তের বিনিময়ে শ্রমিকরা ৪ শ’ ৩৭ কোটি টাকা পাবে মর্মে অসম চুক্তি হয় শ্রমিক ও গ্রামীণ টেলিকমের মধ্যে। কিন্তু সেই টাকার বড় একটি অংশ নামে-বেনামে আত্মসাৎ হয়েছে।
ইতোমধ্যে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের একটি ব্যাংক একাউন্ট থেকে সম্পন্নকৃত কয়েকটি লেনদেনকে সন্দেহভাজন বলে মনে করছেন ডিবি। এর মধ্যে সাড়ে ২৫ কোটি টাকা ৭ জনের মধ্যে লেনদেন হয়।
ডিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্ততার জন্য আইনজীবী ১৬ কোটি টাকা নিয়েছে বলে তারা প্রমাণ পেয়েছে। আর এই অর্থ আত্মসাতে গ্রামীণ টেলিকমের আগের এমডি ও বর্তমান এমডি জড়িত।