বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ দিবস আজ বুধবার। ২০০৭ সালের এই দিনে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায় অনুসারে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করা হয় বিচার বিভাগকে।
ওই রায়ে বিচার বিভাগের অধীনে নিজস্ব সচিবালয় গঠনসহ ১২ দফা নির্দেশনা দেওয়া হলেও তার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে পৃথকীকরণের ১৬ বছরেও দৃশ্যমান পরিবর্তন আসেনি বিচার বিভাগে; বরং একই সময়ে মামলাজট বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। বিচারকদের পদোন্নতি, বদলি, পদায়নের বিষয়গুলোতে আইন মন্ত্রণালয় তথা নির্বাহী বিভাগের প্রাধান্য থাকছেই।
সুপ্রিম কোর্টের তথ্যানুযায়ী, ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর দেশে উচ্চ ও অধস্তন আদালতে বিচারাধীন মামলা ছিল ১৮ লাখ ৩৫ হাজার ৬৫৭টি। বর্তমানে এই মামলার জট ৪৩ লাখে পৌঁছেছে। বিচার বিভাগ-সংশ্লিষ্টদের মতে, বিচার বিভাগের অধীনে পৃথক সচিবালয় এবং নিজস্ব বাজেট প্রণয়নের ক্ষমতা না থাকায় নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে আলাদা করার কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না। কারণ, বিচারকদের পদোন্নতি, বদলি, পদায়নের বিষয়গুলোতে আইন মন্ত্রণালয় তথা নির্বাহী বিভাগই প্রাধান্য পাচ্ছে। বিচারকদের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়ক জনবল, আবাসন, যাতায়াত, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নির্বাহী বিভাগের কাছেই যেতে হচ্ছে। তাই বিচার বিভাগের জন্য নিজস্ব সচিবালয় গঠন করা প্রয়োজন, যা বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ-সংক্রান্ত মাসদার হোসেন মামলার রায়েও বলা হয়েছে।
তবে কিছু সুফলও রয়েছে। মাসদার হোসেন মামলার রায় অনুযায়ী ইতোমধ্যে দেশের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতগুলোর ওপর বিচার বিভাগের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের পরিবর্তে বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটরা বিচারকাজ পরিচালনা করছেন। এ ছাড়া অধস্তন আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য সরকার পৃথক জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন গঠন করেছে। বর্তমান সরকারের টানা তিন মেয়াদে ২০০৯ সাল থেকে অধস্তন আদালতে ১ হাজার ১৫০ সহকারী জজ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আরও ১০০ সহকারী জজ নিয়োগের কার্যক্রমও শুরু হতে যাচ্ছে। ২০০৭ সালে অধস্তন আদালতে ৯২৭ জন বিচারক ছিলেন। বর্তমানে প্রায় দুই হাজার বিচারক কর্মরত।