দেশের অধস্তন আদালতে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্তির (এনরোলমেন্ট) এমসিকিউ পরীক্ষা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার (১৭ নভেম্বর)। এদিন সকাল ১১টায় থেকে শুরু হয়ে পরীক্ষা চলবে বেলা ১২টা পর্যন্ত।
আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষার এই তারিখ নির্ধারণ করে। এদিকে দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিএনপির চলমান অবরোধ শেষ হবে পরীক্ষার দিন অর্থাৎ শুক্রবার সকাল ৬টায়। ফলে দূরপাল্লার গাড়ি বন্ধ থাকায় অনিশ্চয়তার পাশাপাশি নিরাপত্তাহীনতার কথাও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গত মাসের মাঝামাঝিতে বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট কমিটির সভায় ১৭ নভেম্বর এমসিকিউ পরীক্ষা এবং ডিসেম্বরে লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। প্রায় ৫০ হাজারের মতো আইনের শিক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নেবেন জানানো হয়েছে কাউন্সিলের পক্ষ থেকে।
তিন ধাপে এমসিকিউ, লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাই আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়ে আইন পেশায় যুক্ত হতে পারেন। একবার লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তিনবার সরাসরি মৌখিক পরীক্ষা দেওয়া যায়। বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট কমিটি পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকে।
যেহেতু এটি পূর্ব থেকে নির্ধারিত পরীক্ষার সময়সূচি; তাই আপাতত আমাদের পরীক্ষা পেছানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। ৯০ শতাংশ নিশ্চয়তা রয়েছে পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে—অ্যাডভোকেট আব্দুল বাতেন, চেয়ারম্যান, লিগ্যাল এডুকেশন কমিটি, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল।
শুক্রবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে শিক্ষার্থীদের লিখিত (এমসিকিউ) পরীক্ষা। প্রায় অর্ধলক্ষ শিক্ষার্থীর এ পরীক্ষার সকল কেন্দ্রই রাখা হয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা কেন্দ্রে। ফলে যে-সব শিক্ষার্থী ঢাকার বাইরে অবস্থান করছেন বা রাজধানীর বাইরে থেকে এসে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন তাদের নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যদিও কাউন্সিলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক নোটিশে বুধবার জানানো হয়েছে, সকাল ১০ টার পরিবর্তে ১১.০০ টায় পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে।
‘পরীক্ষা কমিটি শুধু রাজধানীর শিক্ষার্থীদের কথাই বিবেচনা করেছেন। তারা রাজধানীর বাইরে থাকা কোনো শিক্ষার্থীর কথা বিবেচনা করেননি। এ পরীক্ষায় দেশের সব স্থানের শিক্ষার্থীরাই অংশগ্রহণ করবেন। যেহেতু অবরোধ চলমান এবং অবরোধ শেষ হওয়ার পাঁচ ঘণ্টা পর পরীক্ষা; সেক্ষেত্রে অনেক শিক্ষার্থীরই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত’—নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী এসব কথা জানিয়েছেন।
পরীক্ষায় দেশের সব স্থানের শিক্ষার্থীরাই অংশগ্রহণ করবেন। যেহেতু অবরোধ চলমান এবং অবরোধ শেষ হওয়ার পাঁচ ঘণ্টা পর পরীক্ষা; সেক্ষেত্রে অনেক শিক্ষার্থীরই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এ নিয়ে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের লিগ্যাল এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুল বাতেন জানিয়েছেন, যেহেতু এটি পূর্ব থেকে নির্ধারিত পরীক্ষার সময়সূচি; তাই আপাতত আমাদের পরীক্ষা পেছানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। ৯০ শতাংশ নিশ্চয়তা রয়েছে পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। আমরা পরীক্ষা পেছানোর বিষয়ে এখনও কোনো সভা করিনি বলেও জানান তিনি।
নিয়মানুযায়ী আইন বিষয়ে স্নাতক পাসের পর একজন প্রার্থী সিনিয়র আইনজীবীর সঙ্গে বার কাউন্সিলের নির্ধারিত ফরমে সদস্যপদের আবেদন জমা দেন। এরপর শিক্ষানবিশ হিসেবে ছয় মাস পার হলে বার কাউন্সিল ওই প্রার্থীকে রেজিস্ট্রেশন ফরম দেয়। আইনজীবীদের তালিকাভুক্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য প্রাথমিক যোগ্যতা এ রেজিস্ট্রেশন। এরপর পরীক্ষার জন্য বার কাউন্সিল সময়সূচি ঘোষণা করলে প্রার্থীরা নির্ধারিত ফরম পূরণ করে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আবেদন করেন।