এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ সচলতায় সিঙ্গাপুরের ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ সচলতায় সিঙ্গাপুরের ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজের সচলতা দেখতে আপাতত সিঙ্গাপুরে আরবিট্রেশন ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে।

যেহেতু সিঙ্গাপুরে আরবিট্রেশন ট্রাইব্যুনালে ইতালিয়ান-থাইয়ের আবেদন (সালিসি মামলা) বিচারাধীন সেহেতু হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা এসংক্রান্ত লিভ টু আপিলটি অকার্যকর মর্মে নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বিভাগ রোববার (১ সেপ্টেম্বর) এ আদেশ দেন।

এই আদেশের ফলে গত ফেব্রুয়ারী থেকে বন্ধ থাকা ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজের সচলতা দেখতে আপাতত সিঙ্গাপুরে আরবিট্রেশন ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে বলে জানান আইনজীবীরা।

আগামী ৩ থেকে অক্টোবর সিঙ্গাপুরের আদালতে বিষয়টির ওপর শুনানির দিন ধার্য আছে বলে জানান শ্যানডং ইন্টারন্যাশনালের আইনজীবী।

আদালতে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইমতিয়াজ ফারুক। সিনোহাইড্রো করপোরেশনের পক্ষে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব। চীনের শ্যানডং ইন্টারন্যাশনালের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও আইনজীবী বেল্লাল শাহীন। আর ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান চায়না এক্সিম ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান খান।

আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেন হাইকোর্ট, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শুরুর পথ খুলল

এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড নামের কোম্পানি গঠন করে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) এই প্রকল্পে বাংলাদেশ ছাড়াও থাইল্যান্ডের একটি ও চীনের দুটি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ এবং নির্মাণকাজের মাধ্যমে অংশীদার।

প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো- থাইল্যান্ডভিত্তিক ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড, চীনের শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ ও সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড। তিন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার যথাক্রমে ৫১, ১৫ ও ৩৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ হলো এক্সপ্রেসওয়ের নির্বাহক প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পের মূল নির্মাণকাজে ব্যয় ধরা হয় ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। চুক্তি অনুসারে, মূল কাঠামো নির্মাণ ব্যয়ের ৭৩ শতাংশ জোগান দেবে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। আর ২৭ শতাংশ দেবে বাংলাদেশ সরকার, যা ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফান্ডিং (ভিজিএফ) নামে পরিচিত।

তবে প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ারসংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের পরিপ্রেক্ষিতে ইতালিয়ান-থাই হাইকোর্টে সালিসি মামলা করে। সে মামলার চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে শেয়ার হন্তান্তরে স্থিতাবস্থা তুলে দিয়ে ইতালিয়ান থাইয়ের আবেদন খারিজ করে ১২ মে হাইকোর্ট রায় দেন। সে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে ইতালিয়ান থাই লিভ টু আপিলটি করে।

এদিকে, চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি সিঙ্গাপুর ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারে আরবিট্রেশন (সালিসি) মামলা করে ইতালিয়ান থাই। নির্মাণকাজের অংশীদার অন্য দুটি কোম্পানির কাছে ইতালিয়ান থাইয়ের শেয়ার হস্তান্তর দাবি এবং ঋণদাতা ব্যাংককের গ্যারান্টির টাকা দাবির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলাটি করা হয়।

‘ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড তাদের ৫১ শতাংশ শেয়ারের ৪৬ শতাংশ ঋণ দায়বদ্ধতা শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ এবং ৫ শতাংশ সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। কিন্তু ঋনদাতা চায়না এক্সিম ব্যাংকের ঋণের প্রথম কিস্তি চাইনিজ অন্য দুটি প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করলেও ইতালিয়ান-থাই প্রথম কিস্তি না দেয়ায় বিরোধের শুরু’ বলে জানান আইনজীবী বেল্লাল শাহীন।