বাংলাদেশে আইনজীবীদের আর্থিক নিরাপত্তা: কে নেবে দায়িত্ব?

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডিতে পেশাদার নেতৃত্ব: আইনজীবীরা থাকবেন সম্মানিত আসনে

বোরহান উদ্দিন খান: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক প্রজ্ঞাপনে একটি ঐতিহাসিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। যার ফলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অ্যাডহক কমিটিতে এখন থেকে এমবিবিএস চিকিৎসক, বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার এবং আইনজীবীরা মনোনীত হতে পারবেন।
নতুন করে জারি করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কলেজের অ্যাডহক কমিটির জন্য সভাপতি ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য পদে অযোগ্যদের দৌরাত্ম্য কমবে। অযোগ্য ব্যক্তিরা শিক্ষকদের ওপর খবরদারি করতে পারবেন না। অন্যদিকে চিকিৎসক-ইঞ্জিনিয়ার ও আইনজীবী পেশার মানুষও শিক্ষাসেবায় নিজেদের নিয়োজিত করার সুযোগ পাবেন।
এই সিদ্ধান্ত শুধু প্রশাসনিক নয়, এটি একটি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন— যেখানে যোগ্যতা, পেশাগত নৈতিকতা ও জনআস্থার ভিত্তিতে নেতৃত্ব বাছাইকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
একজন আইনজীবী— শুধু পেশাজীবী নন, সমাজচিন্তার রূপকার আইনজীবীরা যুগ যুগ ধরে ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও জনস্বার্থ রক্ষায় নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন। তাঁদের বিচার-বিশ্লেষণ ক্ষমতা, যুক্তির দক্ষতা এবং সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডিতে যুক্ত হলে, নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও দায়িত্ববোধ প্রতিষ্ঠা পাবে — যা একটি টেকসই সমাজ গঠনের অন্যতম ভিত্তি।

কেন গভর্নিং বডিতে আইনজীবী অপরিহার্য?

  • আইন ও নীতিমালার যথাযথ প্রয়োগে সচেতন ভূমিকা
  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ
  • ছাত্র-শিক্ষকের অধিকার রক্ষায় বলিষ্ঠ অবস্থান
  • শিক্ষা খাতে দুর্নীতি বা স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার সঙ্গী
এমন প্রেক্ষাপটে আইনজীবী পেশাজীবীদের গভর্নিং বডিতে অন্তর্ভুক্তি শুধু প্রয়োজনীয় নয়, বরং সমাজের সম্মানজনক স্বীকৃতি। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে রাষ্ট্র একটি ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে— “যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতৃত্বই হবে উন্নয়নের প্রধান হাতিয়ার।” পেশাদারিত্ব থাকুক নীতিনির্ধারণে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোক ন্যায় ও জ্ঞানের আলোকে পরিচালিত।
লেখক: অ্যাডভোকেট, জজ কোর্ট, ফেনী