সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও সিনিয়র সহকারী জজ আদালত; পাইকগাছা, খুলনা
সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও সিনিয়র সহকারী জজ আদালত; পাইকগাছা, খুলনা

খুলনার পাইকগাছায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে বিচারিক কার্যক্রম

খুলনার পাইকগাছায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও সিনিয়র সহকারী জজ আদালত এখনো পরিচালিত হচ্ছে প্রায় ৪০ বছরের পুরোনো পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ একটি ভবনে। ছাদে ফাটল, কাঠামোগত দুর্বলতা এবং নিরাপত্তা সংকট সত্ত্বেও বিচারক, কর্মচারী ও আইনজীবীরা প্রতিনিয়ত জীবন ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

বর্তমানে ভবনটিতে কাজ করছেন ১৫ জন আদালত কর্মচারী, ৭১ জন আইনজীবী, ৯০ জন আইনজীবী সহকারী ও শিক্ষানবিশরা। বর্ষা মৌসুমে ছাদ দিয়ে পানি চুইয়ে আদালতের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ভিজে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ভবনের ছাদে যত্রতত্র ফাটল দেখা দিয়েছে, যা থেকে যেকোনো সময় ধসের মতো প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

১৮৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই আদালত দীর্ঘদিন ধরেই এই ভবনে পরিচালিত হচ্ছে। ১৯৯৯ সালে উপজেলা আদালতগুলো জেলায় স্থানান্তরের সরকারি সিদ্ধান্ত এলেও, পাইকগাছা জেলা সদর থেকে ৬৬ কিমি দূরত্বের কারণে বিশেষ বিবেচনায় আদালতটি এখানেই রয়ে যায়। এতে উপকূলীয় জনগণ হয়রানি ও সময় অপচয় থেকে কিছুটা মুক্তি পায়।

পাইকগাছা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জিএম আব্দুস সাত্তার বলেন,

প্রতিনিয়ত জরাজীর্ণ আদালত ভবনে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে আশঙ্কায় কাজ করে। নিরাপত্তার স্বার্থে সুষ্ঠুভাবে আদালতের বিচারক কার্যক্রম পরিচালনা সহ সার্বিক পরিবেশ বজায় রাখতে আইনজীবী ও আদালত ভবন পুনঃনির্মাণের পাশাপাশি পূর্ণ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ভবনটির ছাদের বিভিন্নস্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। এটি জরুরিভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা দরকার, না হইলে যে কোন সময় ছাদ ধ্বসে জীবনহানীর মত ঘটনা ঘটতে পারে।

অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আক্কাজ আলী বলেন,

আইনজীবী ভবন ও আদালত ভবনের সর্বশেষ ভগ্নদশা নিয়ে একাধিকবার বিচারক ও আইনজীবী সমিতির আইন মন্ত্রণালয় সহ প্রধান বিচারপতির কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আদালত ভবনের ছাদ নষ্ট হওয়ায় বৃষ্টির পানিতে আদালতের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ভিজে নষ্ট হচ্ছে। জরুরিভাবে ভবনটির পূর্ণ সংস্কারের প্রয়োজন। তা না হলে ভবনটির ছাদ ধ্বসে যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকালে আদালত ভবন নির্মাণের জন্য স্থাপত্য অধিদপ্তর, সেগুনবাগিচা ঢাকা থেকে নির্বাহী স্থপতি সুমন বিশ্বাস আদালত ভবন পরিদর্শনে আসেন। তখন সিনিয়র সহকারী জজ মো. কামরুজ্জামান ও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্যাহ সহ আইনজীবী গণ উপস্থিত ছিলেন।