ভারতের বীরভূম জেলার দুই পরিবারকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে—এই অভিযোগে আত্মীয়রা কলকাতা হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাস রিট আবেদন করেছেন। নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের আদালতে হাজির করার অনুরোধ জানিয়ে মামলাটি দায়ের করা হয় মঙ্গলবার। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
আবেদনকারী আইনজীবী শবনম সুলতানা বলেন,
আমরা আদালতের কাছে অনুরোধ করেছি যাতে পরিবারের সদস্যদের খুঁজে বের করে আদালতে হাজির করা হয়।
ঘটনার সূত্রপাত ২৬ জুন, যখন বীরভূম জেলার পাইকর গ্রামের দানিশ শেখ, তার স্ত্রী সুনালি খাতুন ও তাদের ৮ বছর বয়সী ছেলেকে দিল্লি পুলিশের হাতে আটক হয়। একই দিনে ধিতরা গ্রামের বাসিন্দা সুইটি বিবি ও তার দুই ছেলে—১৬ বছরের কুরবান শেখ ও ৬ বছরের ইমাম দেওয়ানকেও আটক করে দিল্লি পুলিশ।
দুই পরিবারকেই দিল্লির কে এন কাটজু মার্গ থানায় আটক রাখা হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, পরে তাদের জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
সুনালি খাতুনের বাবা ভদু শেখ এবং সুইটি বিবির ভাই আমির খান এই রিট আবেদন করেন।
আমির খান জানান,
গত রবিবার আমার বোন বাংলাদেশ থেকে ফোন করেছিল। ও ওর ছেলেদের নিয়ে এখন বাংলাদেশের কোথাও আছে। ওরা আমাদের কাছে কাকুতি-মিনতি করছিল ওদের ফিরিয়ে আনার জন্য। আমরা গরিব মানুষ। কিই বা করতে পারি? রাজ্য সরকার সাহায্য করছে। আমরা আদালতের কাছে মিনতি করছি যেন কিছু করে ওদের ফিরিয়ে আনে।
ভদু শেখ বলেন,
আমার মেয়ে, জামাই আর নাতি- ওরাও এখন বাংলাদেশে। জানি না আর কখনও তাদের দেখতে পারব কিনা। ওরা দিল্লিতে গিয়েছিল র্যাগ পিকার (আবর্জনা সংগ্রাহক) হিসেবে কাজ করতে। এখন আমাদের একমাত্র ভরসা আদালত।
পশ্চিমবঙ্গ অভিবাসী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের চেয়ারম্যান সমিরুল ইসলাম জানান,
রাজ্য প্রশাসন কেন্দ্র ও বিএসএফের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে যাতে তাদেরকে খুঁজে বের করে নিরাপদে ফিরিয়ে আনা যায়।
তিনি আরও বলেন,
আমরা পরিবারগুলোর পাশে আছি। একদিকে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছি। অন্যদিকে রাজ্য প্রশাসন কেন্দ্রীয় সরকার ও বিএসএফকে চাপ দিচ্ছে তাদেরকে খুঁজে বের করতে।
রিট আবেদনের শুনানি হবে বুধবার (৯ জুলাই) বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী ও ঋতুব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে। পরিবারের সদস্যরা আদালতের কাছেই এখন ভরসা রাখছেন। আর্তনাদ করে বলছেন—আমরা গরিব, কিছু করার ক্ষমতা নেই। একমাত্র ভরসা এখন আদালত।