স্ত্রীকে দিয়ে মিথ্যা ধর্ষণের মামলা করায় স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জেল-জরিমানা
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২, নওগাঁ

নওগাঁয় অপহরণ ও হত্যা মামলায় দুইজনের মৃত্যুদণ্ড, দুই কিশোরকে ১০ বছর কারাদণ্ড

নওগাঁ জেলার বদলগাছী থানার খাদাইল গ্রামের স্কুলছাত্র নাজমুলকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির পর হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুই প্রাপ্তবয়স্ক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং দুই কিশোরকে ১০ বছরের আটকাদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকালে জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক ও জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার।

আসামিরা হলেন—মিশু (১৯), পিংকি (৩০) এবং দুই কিশোর হুজাইফা (১৪) ও সাজু আহম্মেদ (১৪)।

আদালত সুত্রে জানা গেছে, আসামিরা কৌশলে অপহরণ পূর্বক মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে একটি দল গঠন করে। সে মোতাবেক আসামি পিংকি মোবাইলে ছদ্মনাম ব্যবহার করে নাজমুলকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে।

২০২০ সালের ৬ নভেম্বর বিকাল সাড়ে পাঁচটায় পিংকি নাজমুলকে দেখা করার কথা বলে কৌশলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নারিকেল বাড়ি রোডে ডেকে নেয়। সেখান থেকে আবার পিংকি নাজমুলকে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানার কেসের মোড় রেল লাইনে ডেকে নেয়।

আরও পড়ুন : নওগাঁয় পুরুষাঙ্গ কেটে দেয়ার মামলায় এক মেয়ে শিশুকে পাঁচ বছর আটকাদেশ

পরবর্তীতে ২০২০ সালের ৭ নভেম্বর সকাল দশটায় আসামিরা সকলে মৃত নাজমুলের নিকটে থাকা মোবাইল ফোন হতে নাজমুলের পিতার মোবাইলে ফোন করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে উক্ত স্থানে আসামিরা নাজমুলকে খুন করে।

মৃত নাজমুলের লাশ গোপন করার জন্য আসামি মিশু বাড়ি থেকে সাদা রংয়ের প্লাস্টিকের বস্তা নিয়ে এসে অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় নাজমুলের মৃত দেহটি বস্তায় ভরে আক্কেলপুর রেলগেটের উত্তর পাশে ডোবার মধ্যে ফেলে রাখে।

এ ঘটনায় মৃত স্কুল ছাত্রের পিতা বদলগাছী থানায় অভিযোগ করলে তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

আদালতে প্রাপ্ত বয়স্ক দুই আসামিসহ অভিযুক্ত দুই শিশু নিজেদের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করে। আদালত বিশ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন।

আজ দুইজন আসামি ও শিশু’র উপস্থিতিতে প্রাপ্ত বয়স্ক দুইজন আসামির প্রত্যেককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর ও পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা এবং শিশুদ্বয়ের প্রত্যেককে ১০ বছর আটকাদেশের রায় পড়ে শুনানো হয়।

শিশুদ্বয়ের বর্তমান বয়স আঠারো বছরের উর্ধ্বে হওয়ায় তাদেরসহ মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত দুই আসামিকে সাজা পরোয়ানা মূলে জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বিশেষ কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম। তিনি রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট সাইদ হোসেন আল মুরাদ ও অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহেল কাফি উচ্চ আদালতে আপিলের কথা জানান।