অবকাশে হাইকোর্টে দুই ধাপে ১৪ বেঞ্চে চলবে বিচারকাজ
সুপ্রিম কোর্ট

সুপ্রীম জুডিসিয়াল কাউন্সিল: বিচারপতি অপসারণ ও চলমান তদন্তে নতুন গতি

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করা হলেও পরবর্তীতে হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগ এ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে। যদিও এ বিষয়ে দায়ের করা রিভিউ আবেদন দীর্ঘদিন অনিষ্পন্ন ছিল। অবশেষে ২০ অক্টোবর ২০২৪ খ্রি. তারিখে আপিল বিভাগ রিভিউ নিষ্পত্তি করলে সুপ্রীম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত হয়। এরপর প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট কাউন্সিল কার্যক্রম শুরু করে। অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম এবং বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।

পদত্যাগ ও নিয়োগ বঞ্চিত বিচারপতিরা

কাউন্সিলের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর হাইকোর্ট বিভাগের তিন বিচারপতি — সালমা মাসুদ চৌধুরী, কাজী রেজা-উল হক এবং এ কে এম জহিরুল হক — রাষ্ট্রপতিকে পত্র দিয়ে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাঁদের পদত্যাগপত্র ১৯ নভেম্বর ২০২৪ খ্রি. গৃহীত হয় এবং আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

এছাড়া, হাইকোর্টের আরও ১২ জন বিচারপতির বিষয়ে অভিযোগের পর প্রধান বিচারপতি তাঁদের বেঞ্চ প্রদান থেকে বিরত রাখেন। এর মধ্যে বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিন ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ খ্রি. তারিখ পদত্যাগ করেন। বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলন স্থায়ী নিয়োগ না পেয়ে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব শেষ করেন। অপরদিকে, বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খান (৩০ ডিসেম্বর ২০২৪) এবং বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস (৩০ জানুয়ারি ২০২৫) অবসরে যান।

অপসারিত বিচারপতি ও রাষ্ট্রপতির পদক্ষেপ

সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের তদন্ত শেষে রাষ্ট্রপতি দুইজন বিচারপতিকে অপসারণ করেন। বিচারপতি খিজির হায়াতকে ১৮ মার্চ ২০২৫ এবং বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে ২১ মে ২০২৫ খ্রি. তারিখে অপসারণ করা হয়।

চলমান তদন্ত ও আসন্ন শুনানি

বর্তমানে পাঁচজন বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম চলছে। তাদের মধ্যে বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেন। এ প্রক্রিয়ায় তাঁকে ২৫ জুন ২০২৫ তারিখে কাউন্সিলে তলব করা হয়। ১ জুলাই তিনি হাজির হয়ে নিজের ব্যাখ্যা প্রদান করেন।

কাউন্সিল ইতোমধ্যে ২৬ আগস্ট ২০২৫ খ্রি. তারিখে বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত শুনানির দিন নির্ধারণ করেছে। এ শুনানিকে ঘিরে আইন অঙ্গনে বিশেষ আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।