মোরশেদ কামাল
মোরশেদ কামাল

বাংলাদেশে কোয়াশমেন্ট: তুলনামূলক বিচারনীতি ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট

বাংলাদেশের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় quashment একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিকার বা remedy। সহজভাবে বলতে গেলে, quashment হলো—উচ্চ আদালত কর্তৃক নিম্ন আদালতে চলমান কোনো ফৌজদারি কার্যধারা সম্পূর্ণভাবে বাতিল করে দেওয়া। এটি হতে পারে FIR, complaint case, charge-sheeted case।

বাংলাদেশে এর প্রধান ভিত্তি হলো Code of Criminal Procedure, 1898 (CrPC)-এর Section 561A, যা High Court Division–কে inherent power প্রদান করে। আইনজীবীরা একে প্রায়ই “সেফটি ভালভ” বলেন, কারণ এটি এক ধরনের extraordinary remedy—যেখানে trial court–এর সাধারণ প্রতিকার যথেষ্ট নয়, সেখানে High Court Division সীমিত কিন্তু কার্যকরী হস্তক্ষেপ করতে পারে।

Quashment শব্দের উৎপত্তি

“Quash” শব্দটি এসেছে Middle English quashen থেকে, যা Old French quasser (to annul or overturn) থেকে উদ্ভূত। মূল উৎস হলো Latin quassare, যার অর্থ “to shatter” বা “ভেঙে চুরমার করা।”

Black’s Law Dictionary অনুসারে, to quash অর্থাৎ “to overthrow, vacate, or set aside a decision, indictment, or writ by judicial authority”।

Oxford English Dictionary (OED) এ বলা হয়েছে, quash এর প্রাচীনতম ব্যবহার ১৪শ শতকে পাওয়া যায়, যেখানে এটি “to crush, to destroy, or to annul” অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

আইনগত পরিভাষায়, quash মানে হলো annul, set aside বা void করে দেওয়া—অর্থাৎ কোনো আদেশ, অভিযোগপত্র বা বিচারিক কার্যধারাকে বাতিল ঘোষণা করা।

অতএব, quashment মূলত একটি judicial act—যেখানে আদালত কোনো কার্যধারাকে বাতিল করে procedural irregularity, want of jurisdiction, বা miscarriage of justice প্রতিরোধের জন্য।

প্রাসঙ্গিক Legal Maxims

·         Actus curiae neminem gravabit — আদালতের কোনো কর্মকাণ্ড কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না।

·         Ex debito justitiae — ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার থেকে আদালত quash করতে পারে।

·         Quando lex aliquid concedit, concedere videtur et id sine quo res ipsa esse non potest — আইন কোনো কিছু দিলে, সেটির কার্যকর প্রয়োগের জন্য যা অপরিহার্য তা-ও প্রদান করে।

Quashment-এর নীতিগত বিবর্তন: ইংরেজি কমন ল থেকে বাংলাদেশি বিচারব্যবস্থা পর্যন্ত

ইংরেজি কমন ল’–এর উৎস (১৮–১৯ শতক)

Jurisprudential Root: “Abuse of Process” Doctrine

King’s Bench Division (England)

King’s Bench Division ইংল্যান্ডে উচ্চ আদালতের একটি শাখা, যা মূলত নিম্ন আদালতগুলোর ওপর supervisory jurisdiction প্রয়োগ করত। অর্থাৎ, তারা দেখত যে নিম্ন আদালতের কার্যধারা ন্যায়বিচারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা এবং কোনো অপব্যবহার হচ্ছে কিনা।

যখন কোনো মামলা বা প্রসিডিং ছিল:

·         Vexatious (হয়রানিমূলক বা দুঃসাধ্য),

·         Oppressive (দমনমূলক বা অত্যাচারমূলক),

·         Mala fide (খারাপ উদ্দেশ্যে দায়ের করা), অথবা

·         Meritless (কোনো আইনগত ভিত্তি ছাড়া),

তখন King’s Bench বলতো :

The court has an inherent power to prevent abuse of its process.

অর্থাৎ, আদালতের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা রয়েছে যাতে এটি নিজস্ব প্রক্রিয়ার অপব্যবহার প্রতিরোধ করতে পারে।এই ধারণার ভিত্তিতে আদালত নিম্ন আদালতের প্রসিডিং থামাতে বা বাতিল করতে পারত।

Writ Jurisdiction

King’s Bench Division Remedy হিসেবে দুই ধরনের writ ব্যবহার করত:

1.    Certiorari – নথি/record টেনে এনে lower court-এর সিদ্ধান্ত বা প্রসিডিং বাতিল করা।

2.    Prohibition – নিম্ন আদালতকে কোনো প্রসিডিং চালাতে প্রতিষেধ আরোপ করা।

এই দুটি writ মূলত নিম্ন আদালতের প্রক্রিয়ার অপব্যবহার (abuse of process) রোধ এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য ব্যবহৃত হতো।

এই যুগে King’s Bench Division প্রধানত supervisory এবং corrective function পালন করত। যেকোনো অবৈধ, দমনমূলক বা ভিত্তিহীন মামলার ক্ষেত্রে তারা inherent power ব্যবহার করে lower court-এর প্রসিডিং quash করত।

Jurisprudence

Sir James Fitzjames Stephen (famous jurist) বলেছেন :

Courts must retain a residuary jurisdiction  to prevent miscarriage of justice where positive law provides no remedy.

এই ধারণাই পরে inherent power of High Court doctrine-এ রূপান্তরিত হয়।অর্থাৎ, common law এ quashment ছিল “abuse of process” প্রতিরোধের জন্য judge-made power।

Residuary jurisdiction কথাটির মানে কী ?

Residuary jurisdiction বলতে বোঝায়—লিখিত আইন (positive law) যেখানে কোনো প্রতিকার দেয় না বা ফাঁক–ফোঁকড় রেখে দেয়, সেখানে আদালত ন্যায়বিচার রক্ষার শেষ আশ্রয় হিসেবে কিছু অন্তর্নিহিত ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।

Stephen–এর মূল থিসিস: আইনের লক্ষ্য ন্যায়বিচার; যদি কোনো নির্দিষ্ট বিধান না থেকেও স্পষ্ট অন্যায় হতে বসে, আদালত “অকর্মণ্য” থাকতে পারে না।এই ক্ষমতা আইনের বিরোধী নয়; বরং আইনের উদ্দেশ্যকে কার্যকর করে—যেখানে লিখিত বিধান নীরব বা অপর্যাপ্ত।

সংক্ষেপে: positive law = লিখিত বিধান, আর residuary jurisdiction = ন্যায়বিচারের স্বার্থে আদালতের শেষ ভরসার ক্ষমতা।

কেন এই ক্ষমতা দরকার ?Positive law বনাম Justice gap

লিখিত আইন সব পরিস্থিতি কভার করতে পারে না। নতুন ধরনের অপব্যবহার, প্রক্রিয়াগত ফাঁক, জুরিসডিকশনের ভুল প্রয়োগ, বা দুর্বৃত্তমূলক মামলা—এইসব “edge cases”–এ কোডে স্পষ্ট পথ নাও থাকতে পারে।

এখানেই Stephen বলছেন—ন্যায়বিচারে বাধা এলে আদালতকে residuary power ব্যবহার করতে হবে, যেন “miscarriage of justice” (ন্যায়বিচারের ব্যর্থতা) না ঘটে।

ধারণা → Doctrine: 561A–এর জন্ম (codification)

Stephen–এর এই চিন্তারই কোডিফাইড রূপ হলো CrPC 1898, Section 561A (1923 সংশোধনে সংযোজিত):

High Court Division–এর inherent power থাকবে—

·         Code–এর আদেশ কার্যকর করতে,

·         abuse of the process ঠেকাতে,

·         ends of justice নিশ্চিত করতে।

এখানে লক্ষ্য করুন, শব্দদ্বয়—prevent abuse ও secure the ends of justice—exactly সেই residuary jurisdiction–এর ভাষা।

বাংলাদেশের আইনে Quashment

Statutory Basis

Section 561A, CrPC (1898):

Nothing in this Code shall be deemed to limit or affect the inherent power of the High Court Division to make such orders as may be necessary to give effect to any order under this Code, or to prevent abuse of the process of any Court or otherwise to secure the ends of justice.

1923 সালের Amendment-এর মাধ্যমে এই ধারা যুক্ত হয়, যাতে High Court Division exceptional পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করতে পারে।

বাংলাদেশের বিচারিক নীতি  দৃষ্টান্ত

Sher Ali (Md) v State, 46 DLR (AD) 67 (1994)

Appellate Division বলেন—Section 561A ব্যবহার করে conviction–ও quash করা যেতে পারে, যদি—

·         trial court–এর jurisdiction না থাকে,

·         অভিযোগ অপরাধ গঠন না করে,

·         conviction “no evidence”–এর ভিত্তিতে হয়, বা

·         ends of justice তা দাবি করে।

Ali Akkas v Enayet Hossain, 17 BLD (AD) 44 = 31 DLR (AD) 69 (1997)

এই মামলায় পাঁচটি শর্ত নির্ধারণ করা হয়, যেগুলো থাকলে quash করা সম্ভব—

  • অভিযোগগুলো সত্য ধরে নিলেও কোনো অপরাধ গঠন করে না।
  • কার্যধারা স্পষ্টতই আদালতের প্রক্রিয়ার অপব্যবহার।
  • কোনো Statutory bar রয়েছে।
  • অভিযোগ সত্য হলেও তা ফৌজদারি অপরাধ নয়।
  • অভিযোগ অপরাধ প্রকাশ করে, কিন্তু কোনো বৈধ প্রমাণ নেই বা প্রমাণ স্পষ্টতই অপ্রতুল।

এই ধারা ব্যবহার করা হবে না প্রতিটি মামলায়, বরং শুধুমাত্র “rarest of rare cases”-এ। Abdul Quader Chowdhury v. State (44 DLR AD 139)– আদালত বলেছে, 561A কোনো “alternative remedy” নয়, বরং একান্ত ব্যতিক্রমী ক্ষমতা।

তুলনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি (Comparative Perspective)

ভারত

ভারতীয় CrPC-এর Section 482-তে inherent power দেওয়া হয়েছে High Court-কে। ব্রিটিশ judicial review-এর prevent abuse of process ও ensure legality নীতি ভারতীয় ফৌজদারি প্রক্রিয়ায় রূপান্তরিত হয়। ভারতে Section 482, Code of Criminal Procedure, 1973 হলো কোয়াশমেন্টের প্রধান ভিত্তি। এই ধারা High Court-কে inherent power দিয়েছে —

১) ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য,

২) আইনের অপব্যবহার রোধ করার জন্য,

৩) আদালতের আদেশ কার্যকর করার জন্য।

Bhajan Lal v. State of Haryana, AIR 1992 SC 604 মামলায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সাতটি নির্দেশনা (guidelines) দিয়েছে, যার ভিত্তিতে High Court মামলা quash করতে পারে। এগুলো হলো:

১. অভিযোগ যদি কোনো অপরাধ গঠন না করে।

২. First Information Report (FIR) বা অভিযোগপত্র যদি ভিত্তিহীন হয়।

৩. অভিযোগ আইনত অপরাধ না হয়।

৪. অভিযোগে প্রমাণের কোনো সুযোগ না থাকে।

৫. মামলা যদি কেবল হয়রানি করার জন্য দায়ের হয়।

৬. আইনের অপব্যবহার হলে।

৭. আদালতের প্রক্রিয়া অপব্যবহৃত হলে।

R.P. Kapur v. State of Punjab, AIR 1960 SC 866 মামলাতেও Supreme Court বলেছিল— High Court has the power to quash proceedings to secure the ends of justice.

ভারতে তাই কোয়াশমেন্ট বিচার ব্যবস্থার একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। অনেক আইনবিদ যেমন  Ratanlal & Dhirajlal’s Code of Criminal Procedure (LexisNexis, 20th Edition)-এ লিখেছেন, এটি হলো “safety valve against misuse of criminal law.”

পাকিস্তান (Pakistan)

এখানেও ব্রিটিশ judicial review-এর প্রভাব ছিল, যা সরাসরি ভারত ও পাকিস্তান হয়ে বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়।পাকিস্তানে Section 561A, CrPC 1898 এখনো বহাল আছে। এখানকার বিচারব্যবস্থায় কোয়াশমেন্ট মূলত High Court-এর inherent power।

State v. Bashir, PLD 1997 SC 408 মামলায় Supreme Court বলেছিল—“The power under Section 561A is extraordinary and must be exercised sparingly, with caution, and only in the interest of justice.”

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ রায় হলো Abdul Karim v. State, PLD 1962 SC 403, যেখানে বলা হয়েছিল যে quashment কখনোই investigation পর্যায়ে courts-এর interference হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না, যদি না মামলাটি সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা বা vexatious হয়।

পাকিস্তানের বিচারব্যবস্থা ভারতের ধারা 482-এর মতো হলেও, সেখানে আদালত তুলনামূলকভাবে সীমিত ব্যবহার করে, যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে অযথা হস্তক্ষেপ না হয়।

যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্যে CrPC-এর মতো কোনো “quashment section” নেই। তবে দুটি ব্যবস্থা দিয়ে একই ধরনের সুরক্ষা দেওয়া হয়:

১) Inherent Jurisdiction of Courts – উচ্চ আদালতগুলো inherent jurisdiction ব্যবহার করে “abuse of process” প্রতিরোধ করে।

২) Judicial Review – Administrative Court (High Court-এর অংশ) সরকারের বা lower court-এর সিদ্ধান্তকে বাতিল করতে পারে, যদি তা illegality, irrationality, or procedural impropriety-এর ভিত্তিতে হয়।

একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা হলো Connelly v. DPP [1964] AC 1254 (HL), যেখানে House of Lords বলেছিল—

“The courts retain the inherent jurisdiction to prevent abuse of process and secure fairness in trials.”

ব্রিটিশ আইনে তাই কোয়াশমেন্ট না থাকলেও “abuse of process doctrine” কার্যত একই কাজ করে।

ব্রিটিশ আদালত অনেক আগেই এই নীতি দাঁড় করিয়েছে যে, lower courts যদি jurisdiction-এর বাইরে কাজ করে বা abuse করে, তবে superior court হস্তক্ষেপ করতে পারে। ইংল্যান্ডে prerogative writs (যেমন: certiorari) এর মাধ্যমে lower court-এর order “quash” করা যেত। এই ধারণা থেকেই আমাদের CrPC 561A এসেছে—যেখানে High Court Division-এর inherent power আছে proceeding quash করার।

সহজভাবে: ব্রিটিশ judicial review থেকে বাংলাদেশে এসেছে “prevent abuse of process” এবং “ensure legality” নীতি। ইংল্যান্ডে “Rule of Law” ধারণা থেকে এই নীতি গড়ে ওঠে। Lord Denning, Dicey প্রমুখ juristরা বলেছেন যে আদালতের দায়িত্ব শুধু আইন প্রয়োগ নয়, বরং ন্যায়বিচার ও প্রক্রিয়ার অপব্যবহার রোধ করা।

Wednesbury principle of unreasonableness (1948, Associated Provincial Picture Houses Ltd v Wednesbury Corporation) মামলায় আদালত বলেন: যদি কোনো সিদ্ধান্ত “so unreasonable that no reasonable authority could ever have come to it”, তবে আদালত হস্তক্ষেপ করবে।এখান থেকেই prevent abuse of process দর্শন গড়ে ওঠে।

একইভাবে, “Illegality” doctrine (Lord Diplock, Council of Civil Service Unions v Minister for the Civil Service [1985], অর্থাৎ GCHQ case) আদালত জোর দেন যে কোনো কর্তৃপক্ষ আইনের সীমার বাইরে গেলে বা ক্ষমতার অপব্যবহার করলে আদালত হস্তক্ষেপ করবে।

যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে quashment নামে কোনো inherent power নেই। কিন্তু Habeas Corpus একই রকম ভূমিকা রাখে । যেখানে Habeas Corpus হলো এক ধরনের extraordinary writ, যা federal courts ইস্যু করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে কোয়াশমেন্টের ধারণা Habeas Corpus এবং Supervisory Jurisdiction-এর মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়।

Habeas Corpus: Constitution-এর অধীনে আদালত অবৈধ আটক বা দণ্ড বাতিল করতে পারে।

Supervisory Power of Federal Courts: U.S. Supreme Court এবং Federal Courts lower courts-এর রায় quash করতে পারে, যদি তা due process লঙ্ঘন করে।

Ex parte Bollman, 8 U.S. (4 Cranch) 75 (1807) মামলায় U.S. Supreme Court বলেছিল যে Habeas Corpus writ হলো “a fundamental safeguard against arbitrary detention.”

আবার McNabb v. United States, 318 U.S. 332 (1943) মামলায় Supreme Court supervisory power ব্যবহার করে দণ্ড বাতিল করেছিল, কারণ তদন্ত প্রক্রিয়ায় সংবিধান ভঙ্গ হয়েছিল।

তুলনামূলক বিশ্লেষণ

ভারত ও পাকিস্তান: CrPC-তে কোয়াশমেন্টের জন্য সরাসরি ধারা রয়েছে (India – Sec 482, Pakistan – Sec 561A)।

বাংলাদেশ: পাকিস্তানের ধারা 561A বহাল। Quashment in Bangladesh/India = preventive remedy (before trial)

আমেরিকা: Habeas corpus + Supervisory jurisdiction. Habeas Corpus in USA = curative remedy (after conviction/detention) তবে দুটোই একই doctrinal root থেকে এসেছে—British common law writ jurisdiction।

·         Quashment ফোকাস করে abuse of process এ।

·         Habeas Corpus ফোকাস করে legality of detention এ।

যুক্তরাজ্য: Abuse of process doctrine + Judicial Review.

অতএব, সকল বিচারব্যবস্থায় একটি সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি পাওয়া যায়— আদালতকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যাতে আইনের অপব্যবহার রোধ করা যায় এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়।

উদাহরণ (hypotheticals) – ধারণা থেকে প্রয়োগ

উদাহরণ–১: Statutory bar

ধরা যাক forgery–সংক্রান্ত অভিযোগ, কিন্তু নথি আদালতে “produced/given in evidence”; CrPC 195(1)(c) অনুযায়ী উক্ত আদালতের কমপ্লেইন্ট ছাড়া cognizance নেয়া যাবে না। তবু cognizance নেয়া হয়েছে—এখানে positive law–ই নিষেধ আরোপ করেছে। High Court 561A–এ quash করবে—এটাই residuary jurisdiction–এর সঠিক ব্যবহার (আইনের উদ্দেশ্য রক্ষা)।

উদাহরণ–২:  No offence disclosed

FIR–এ এমন facts যা সত্য মেনেও Penal Code–এর কোনো ধারা trigger করে না। ট্রায়াল চালানো oppressive; আদালত 561A–এ থামাবে—miscarriage of justice প্রতিরোধ।

উদাহরণ–৩: Mala fide/harassment

একই fact–set নিয়ে বারবার মামলা, রাজনৈতিক বিদ্বেষে হয়রানি—এখানে abuse of process চিহ্নিত হলে 561A–এ preventive relief।

কোয়াশমেন্ট ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা ও সুরক্ষা

এক্ষেত্রে সীমা আর নীতিগত সংযম জরুরি কারণ:

Separation of Powers: আদালত আইন তৈরি করে না; শুধু আদালতের প্রক্রিয়ার অপব্যবহার প্রতিরোধ করে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে। Quashment-এর ব্যবহার তাই strictly judicial, legislative নয়।

Parliamentary Supremacy: স্পষ্ট আইন বা statutory provisionকে quashment-এর মাধ্যমে অতিক্রম করা যাবে না। আদালতের কাজ হলো আইনকে সমর্থন করা এবং প্রয়োগ করা, override করা নয়।

Judicial Economy : Judicial Economy বলতে বোঝায়—আদালতের সময়, সম্পদ এবং বিচারিক সক্ষমতার কার্যকর ব্যবহার। আদালত যাতে অপ্রয়োজনীয়ভাবে সময় নষ্ট না করে, বরং মূল আইনি বিতর্কে ফোকাস করতে পারে, সেটিই Judicial Economy-এর মূল উদ্দেশ্য। Quashment fact-intensive disputes- (যেখানে অনেক জটিল প্রমাণ, সাক্ষ্য, তথ্য-উপাত্তের বিশ্লেষণ দরকার হয়) সেগুলো সাধারণত Trial Court-এ বিচার করার বিষয়। আবার আদালত এমন fact-intensive dispute যেখানে সত্য-মিথ্যা নির্ধারণের জন্য পূর্ণাঙ্গ প্রমাণ-পরীক্ষা প্রয়োজন, সেটিকে সরাসরি quash করতে চায় না—কারণ সেটা Trial Court-এর কাজ। High Court-কে smoke detector বা procedural safeguard হিসেবে দেখতে হবে।

এই limits and safeguards ensures করে যে quashment ক্ষমতা justice gap পূরণ করে, কিন্তু judicial overreach ঘটায় না, এবং judicial restraint বজায় থাকে।

নতুন দর্শন: “কোয়াশমেন্টের মানবিক দর্শন” (A New Philosophy of Quashment)

আমার প্রস্তাবিত দর্শন হলো

কোয়াশমেন্ট কেবল আইনের অপব্যবহার প্রতিরোধ নয়, বরং ন্যায়বিচারের মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার ব্যবস্থার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।

১. Human Rights ভিত্তি: আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন (যেমন ICCPR, Article 9 – liberty and security of person) অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যেন মিথ্যা মামলা বা অযথা আইনি প্রক্রিয়ায় ভুক্তভোগী না হন।

২. Restorative Justice Philosophy: কোয়াশমেন্টকে শুধু মামলা বাতিলের যন্ত্র হিসেবে নয়, বরং ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত উভয়ের জন্য একটি “justice balancing tool” হিসেবে দেখা উচিত।

৩. Digital Age Adaptation: সাইবার অপরাধ, রাজনৈতিক মামলা বা mass surveillance সংক্রান্ত মামলায় কোয়াশমেন্ট আদালতকে constitutional guardian হিসেবে কাজ করার সুযোগ দেয়।

৪. Bangladesh Model of Quashment:

·         Proportionality Test: মামলা চালানো ন্যায়সঙ্গত কিনা, তা “proportionality principle” দিয়ে যাচাই করা।

·         Access to Justice: আদালত যেন সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য হয়, যাতে তারা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে দ্রুত প্রতিকার পায়।

এই দর্শনের মূল বক্তব্য হলো:

 “Quashment is not merely a procedural safeguard, but a constitutional guarantee of justice, fairness, and human dignity.”

লেখক : মো. মোরশেদ কামাল আলিফ; শিক্ষানবিশ আইনজীবী।