আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলায় রিপন দাসের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ

অ্যাডভোকেট আলিফ হত্যা মামলা: ৩৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ

সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় নৃশংসভাবে নিহত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও চট্টগ্রাম কোর্টের তরুণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় দাখিল করা চার্জশিট আদালত গ্রহণ করেছে।

আজ সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দীন তদন্ত কর্মকর্তার দাখিল করা চার্জশিট গ্রহণযোগ্যতা শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। শুনানিতে বাদী ও শহীদ আলিফের পিতা জনাব জামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোঃ রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান এজাহারনামীয় ৩ জনকে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় এবং আরেকজনের সঠিক নাম-ঠিকানা না মেলায় অব্যাহতির আবেদন করেছেন। এ ব্যক্তির নাম সুকান্ত দত্ত, যিনি সিএমপির অস্ত্র, মাদক, চুরি, ডাকাতিসহ ৮টি মামলার আসামি এবং তদন্ত রিপোর্টে “দুর্ধর্ষ আসামি” হিসেবে চিহ্নিত।

রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তি উপস্থাপন করে জানায়, সুকান্ত দত্ত ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। হত্যার পর মূল আসামিদের সাথে তার ছবি ভাইরাল হয়েছে। তাই তাকে আসামি হিসেবেই অন্তর্ভুক্ত রাখার আবেদন জানানো হয়। আদালত এই আবেদন গ্রহণ করে ৩৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন এবং পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

এর আগে গত ১০ আগস্ট আদালত বাদীর উপস্থিতিতে রিপোর্ট শুনানির জন্য সমন জারি করেন। সোমবার বাদী জামাল উদ্দিন আদালতে হাজির হয়ে তদন্ত প্রাপ্ত আসামি বিষয়ে নারাজি দাখিল করবেন না বলে আদালতকে অবহিত করেন।

প্রথম এজাহারে ৩১ জনকে আসামি করা হলেও, তদন্তে গগন দাশ, বিশাল দাশ ও রাজকাপুর মেথরের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় অব্যাহতির আবেদন করা হয়। তবে নতুন করে চিন্ময় দাশসহ আরও ১০ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় মোট ৩৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গৃহীত হয়েছে।

বর্তমানে ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ২০ জন আসামি গ্রেপ্তার রয়েছেন এবং ১৮ জন পলাতক।

চার্জশিটভুক্ত আসামিদের তালিকা

চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিরা হলেন— চন্দন দাশ মেথর, রিপন দাশ, রাজীব ভট্টাচার্য্য, শুভ কান্তি দাশ, আমান দাশ, বুঞ্জা, রনব, বিধান, বিকাশ, রমিত প্রকাশ দাস, রুমিত দাস, নয়ন দাশ, ওমকার দাস, বিশাল, লালা দাশ, সামীর, সোহেল দাশ, শিব কুমার, বিগলাল, পরাশ, গণেশ, ওম দাস, পপি, অজয়, দেবী চরণ, দেব, জয়, লালা মেথর, দুর্লভ দাশ, সুমিত দাশ, সনু দাস, সকু দাশ, ভাজন, আশিক, শাহিত, শিবা দাস ও দ্বীপ দাস।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৬ নভেম্বর সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা জামাল উদ্দিন ৩১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়।