আদালত অবমাননার অভিযোগে জগবন্ধু মজুমদার নামে এক আইনজীবীকে সাজা দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ৫ নম্বর অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান সাজার আদেশ দেন।
অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ এর ৫২(২) ধারা মোতাবেক এই আইনজীবীকে এক হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আদালতের পেশকার মো. ইমরুল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আইনজীবী জগবন্ধু একটি অর্থঋণ মামলার শুনানির সময় বিচারকের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। একইসাথে বিচারকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে আদালত অবমাননা করেন। এ ঘটনায় শোকজের পর সাজা দেন আদালত।
আদেশ থেকে জানা যায়, গত ১২ অক্টোবর ব্যাংক এশিয়ার ৪ কোটি ২ লাখ ৩৫ হাজার ১১ টাকার ঋণ খেলাপির মামলায় বাদীপক্ষের সাক্ষ্যের দিন ধার্য ছিল। ওইদিন বিবাদী খন্দকার শামসুল আলমের পক্ষে আইনজীবী জগবন্ধু মজুমদারের দাখিল করা একটি দরখাস্ত যথাযথ ডিপোজিট স্লিপ দাখিল করতে না পারায় নামঞ্জুর করেন আদালত। এসময় আকস্মিকভাবে আদালতের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি আদালতকে কটাক্ষ করেন।
আদেশে আরো বলা হয়, আইনজীবী এজলাসের ডায়াস চাপড়িয়ে অপ্রাসঙ্গিকভাবে অন্য এক মামলায় প্রসঙ্গ তুলে হাইকোর্টে এই আদালতকে বিচারের সম্মুখীন করবেন মর্মে চোখ রাঙিয়ে শাসাতে থাকেন। মারমুখী মুখভঙ্গি নিয়ে আদালতের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করেন। পরে অন্য আইনজীবীরা তাকে নিবৃত করে বাইরে নিয়ে যান। আইনজীবীর এমন উত্তপ্ত আচরণের ফলে এজলাসে বিচারিক কাজে বিঘ্ন ঘটে।
এ ঘটনায় ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ এর ৫২ ধারায় অভিযোগ এনে সোমবার কারণ দর্শানোর দিন ধার্য করেন আদালত। এদিন আইনজীবী জগবন্ধু আদালত অবমাননার দায় স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
আদেশে বলা হয়, ‘জগবন্ধু মজুমদারের ক্ষমা প্রার্থনার দরখাস্ত মঞ্জুর করলে আদালতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সামগ্রিক দিক বিবেচনায় তাকে অবমাননার দায় থেকে অব্যাহতির দরখাস্ত নামঞ্জুর করা হলো। অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ এর ৫২(২) ধারা মোতাবেক এক হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো। অবিলম্বে জরিমানার টাকা পরিশোধের জন্য নির্দেশ দেওয়া গেল। অর্থদণ্ড পরিশোধ বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বেঞ্চ সহকারীকে নির্দেশ দেওয়া গেল।’