সাবেক মিলিটারি অ্যাডভোকেট জেনারেল মেজর জেনারেল ইয়িফাত টোমার–ইরুশালমি
সাবেক মিলিটারি অ্যাডভোকেট জেনারেল মেজর জেনারেল ইয়িফাত টোমার–ইরুশালমি

ফিলিস্তিনি বন্দী নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস, ইসরায়েলের আইনজীবী গ্রেপ্তার

ইসরায়েলি সেনাদের হাতে ফিলিস্তিনি এক বন্দীকে নির্মমভাবে নির্যাতনের ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) সাবেক মিলিটারি অ্যাডভোকেট জেনারেল মেজর জেনারেল ইয়িফাত টোমার–ইরুশালমিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বিবিসির সোমবারের (৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভিডিও ফাঁসের দায় স্বীকার করে গত সপ্তাহেই পদত্যাগ করেন টোমার–ইরুশালমি। তবে পরবর্তীতে তিনি নিখোঁজ আছেন বলে দাবি করে কর্তৃপক্ষ। তেল আবিবের উত্তরের একটি সৈকতে ঘণ্টাব্যাপী তল্লাশির পর পুলিশ তাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে এবং পরে হেফাজতে নেয়।

এর আগের দিন জেরুজালেমের সুপ্রিম কোর্টের বাইরে কালো মুখোশ পরিহিত চারজন অভিযুক্ত সৈন্য সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে। তাদের আইনজীবীরা মামলাটিকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে অভিহিত করেন।

তদন্ত সূত্রে জানা যায়, ভিডিওতে নির্যাতনের শিকার ওই ফিলিস্তিনি বন্দীকে ২০২৪ সালের অক্টোবরে হামাসের সঙ্গে বন্দী বিনিময়ের অংশ হিসেবে গাজায় ফেরত পাঠানো হয়েছিল।

ভিডিওটি প্রথম প্রকাশ পায় ২০২৪ সালের আগস্টে, একটি ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেলে। তাতে দেখা যায়, দক্ষিণ ইসরায়েলের স্ডে টাইমান সামরিক ঘাঁটিতে কয়েকজন রিজার্ভ সৈন্য এক ফিলিস্তিনি বন্দীকে আলাদা করে নিয়ে যায়। এরপর তারা দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত ঢাল দিয়ে তাকে ঘিরে নির্মমভাবে মারধর করে এবং যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে।

ঘটনার পর গুরুতর আহত অবস্থায় ওই বন্দীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পাঁচজন রিজার্ভ সৈন্যের বিরুদ্ধে ‘গুরুতর নির্যাতন ও শারীরিক ক্ষতি সাধনের’ অভিযোগে মামলা হয়, যদিও তারা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ভিডিও ফাঁসের পর ইসরায়েলি সামরিক কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করে। তদন্ত চলাকালে জেনারেল টোমার–ইরুশালমিকে সাময়িক ছুটিতে পাঠানো হয়। তবে গত শুক্রবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ ঘোষণা দেন, তিনি আর পদে ফিরতে পারবেন না।

পদত্যাগপত্রে টোমার–ইরুশালমি লিখেছেন, “আমার অধীনস্থ ইউনিট থেকে কোনো তথ্য গণমাধ্যমে ফাঁস হয়ে থাকলে, তার সম্পূর্ণ দায়িত্ব আমি নিচ্ছি। সেনাবাহিনীর আইন বিভাগকে ঘিরে মিথ্যা প্রচারণা প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে কিছু উপকরণ প্রকাশের অনুমোদন দিয়েছিলাম।”