বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোকাররামুছ সাকলান সাবেক সংসদ সদস্য মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে আইনি নোটিশ প্রেরণ করেছেন।
এই নোটিশটি আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) কুরিয়ার, ডাক, হস্তান্তর ও অনলাইন মাধ্যমে পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়েছে, গত ৫ নভেম্বর ২০২৫ সালে বরিশালের বাবুগঞ্জ থানার কেদারপুরে এক জনসভায় সাবেক এমপি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ প্রকাশ্যে আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন— “ওকালতি যারা করে, তারা কিন্তু টাউট-বাটপার।”
অ্যাডভোকেট মোকাররামুছ সাকলান নোটিশে উল্লেখ করেন, একজন সাবেক সংসদ সদস্যের মুখে এমন মন্তব্য শুধুমাত্র অশালীন ও মানহানিকর নয়, এটি দেশের ন্যায়বিচার ব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করে। তাঁর বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, অনলাইন নিউজপোর্টাল ও অন্যান্য মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ায় দেশের সকল আইনজীবীর সম্মান ও মর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, এই বক্তব্য বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৯৯, ৫০০ ও ৫০২ ধারার আওতায় মানহানিকর অপরাধ হিসেবে দণ্ডনীয়। একইসঙ্গে এটি সংবিধানের ১০৮ অনুচ্ছেদের আলোকে আদালত অবমাননার শামিল। কারণ, আইনজীবীরা আদালতের কর্মকর্তা হিসেবে বিচার প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন; তাদের অবমাননা করা মানে বিচারব্যবস্থার মর্যাদায় আঘাত হানা।
অ্যাডভোকেট মোকাররামুছ সাকলান নোটিশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন— মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদের মন্তব্য ছিল ‘ইচ্ছাকৃত, পরিকল্পিত এবং বিদ্বেষপ্রসূত’, যার মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের সমগ্র আইনজীবী সমাজকে জনসম্মুখে অপমানিত করেছেন এবং জনগণের মধ্যে আইনপেশা সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরির চেষ্টা করেছেন।
আরও পড়ুন : আইনপেশা নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য: বিএনপি নেতাকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান
তিনি নোটিশে তিনটি শর্তে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন—
১. অবিলম্বে উক্ত বক্তব্য প্রত্যাহার করে প্রকাশ্যে স্বীকার করতে হবে যে মন্তব্যটি ভিত্তিহীন ও দায়িত্বহীন ছিল।
২. ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
৩. ভিডিও আকারে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে তা সামাজিক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার করতে হবে এবং দুটি জাতীয় দৈনিকে (একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি) প্রকাশ করতে হবে।
অ্যাডভোকেট মোকাররামুছ সাকলান সতর্ক করে বলেছেন, যদি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই শর্তগুলো পূরণ না করেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে নিম্নলিখিত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে—
-
দণ্ডবিধির ৪৯৯–৫০২ ধারায় ফৌজদারি মামলা;
-
মানহানির কারণে দেওয়ানি মামলা ও ক্ষতিপূরণ দাবি;
-
আদালত অবমাননার অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টে কনটেম্পট প্রক্রিয়া শুরু।
তিনি বলেন, এই নোটিশ সরল বিশ্বাসে (Good Faith) প্রদান করা হয়েছে, যাতে মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ নিজের ভুল স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। অন্যথায় আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নোটিশের একটি অনুলিপি রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য তাঁর চেম্বারে রাখা হয়েছে।

