গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

রিয়েল এস্টেট ডেভেলপাররা সাফ কবলা দলিলমূলে ফ্ল্যাট বা জমি পুনঃবিক্রয় বা হস্তান্তরের সময় অনুমোদন ফি নিতে পারবে না

ফ্ল্যাট বা জমি বিক্রয়-পরবর্তী হয়রানি, অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও অযৌক্তিক জটিলতা বন্ধে সরকার রিয়েল এস্টেট খাতে বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন থেকে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপাররা সাফ কবলা দলিলমূলে বিক্রিত ও হস্তান্তরিত ফ্ল্যাট বা জমি পুনঃবিক্রয় বা হস্তান্তরের সময় কোনো প্রকার অনুমোদন ফি বা চার্জ নিতে পারবে না।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অনেক ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান ক্রেতা বা বিক্রেতার কাছ থেকে “বিক্রয় অনুমোদন”, “নামজারি ফি”, “হস্তান্তর ফি” বা “প্রশাসনিক চার্জ” ইত্যাদি নামে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করে আসছিল। এর ফলে ক্রেতারা চূড়ান্ত দলিল সম্পাদনের পরও হয়রানির শিকার হচ্ছিলেন। এই অনিয়ম রোধে মন্ত্রণালয় জনস্বার্থে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে—

রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার কর্তৃক সাফ কবলা দলিলমূলে বিক্রিত ও হস্তান্তরিত ভূমি অথবা ফ্ল্যাট পরবর্তীতে পুনঃবিক্রয় বা হস্তান্তরের সময় বিক্রয়, হস্তান্তর বা নামজারির অনুমোদনের নামে অর্থ আদায় সম্পূর্ণ আইন বহির্ভূত।

এর ফলে এখন থেকে কোনো ডেভেলপার সংস্থা বা হাউজিং কোম্পানি আর ক্রেতা-বিক্রেতার কাছ থেকে ফি বা কমিশন নিতে পারবে না। কেউ এ আদেশ অমান্য করলে “রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০” এবং “রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০১১” অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে অপরাধমূলক কার্যকলাপ হিসেবে আইনি পদক্ষেপও নেওয়া যেতে পারে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, এই সিদ্ধান্তের মূল লক্ষ্য হলো—

  • ফ্ল্যাট ক্রেতা ও জমির মালিকদের অযৌক্তিক অর্থ আদায় ও হয়রানি থেকে রক্ষা করা

  • ভূমি ও ফ্ল্যাট হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা

  • রিয়েল এস্টেট খাতে আইনগত শৃঙ্খলা ও ক্রেতা-বিক্রেতার আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, “ক্রেতারা দলিল সম্পন্ন করার পরও অনেক প্রতিষ্ঠান অযৌক্তিকভাবে অনুমোদন ফি দাবি করত। এখন থেকে এসব প্রথা বন্ধ হবে। আইন অমান্য করলে সরাসরি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উল্লেখ্য, রিয়েল এস্টেট খাত বাংলাদেশে দ্রুত সম্প্রসারিত হলেও অনেক প্রতিষ্ঠান ক্রেতা-বিক্রেতার কাছ থেকে অতিরিক্ত চার্জ, বিলম্ব ফি, কিংবা হস্তান্তর ফি দাবি করে আসছিল। ফলে ফ্ল্যাট বা প্লট মালিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হচ্ছিল। সরকারের এই নতুন পদক্ষেপকে অনেকেই “ভূমি ও আবাসন খাতে সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক” হিসেবে দেখছেন।

জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে।