বিচারকদের নিরাপত্তা ইস্যুতে কলম বিরতি স্থগিত সিদ্ধান্ত বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের দুই নির্বাহী সদস্য পদত্যাগ করেছেন।
বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সহকারী মহাসচিব মোঃ জুনাইদ এবং আপ্যায়ন সম্পাদক মোঃ মোসলেম উদ্দীন পদত্যাগ করেছেন।
বিচারকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে এসোসিয়েশনের ঘোষিত কর্মসূচি স্থগিতের সিদ্ধান্তকে তারা অযৌক্তিক, অগণতান্ত্রিক এবং বিচারকদের ন্যায্য অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
গত ১৩ নভেম্বর এসোসিয়েশন বিচারকদের বাসস্থান, আদালত ও যাতায়াতের পথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই দফা দাবি উত্থাপন করে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটামসহ কলম বিরতির ঘোষণা দেয়। এ ঘোষণা দেশের সব প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে।
কিন্তু ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত অনলাইন সভায় সরকার পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না আসা সত্ত্বেও নির্বাহী কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য কর্মসূচি স্থগিতের পক্ষে মত দিলে সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে নেতৃত্বের ভূমিকা, সভার পরিবেশ এবং গণতান্ত্রিক চর্চা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
সহকারী মহাসচিব মোঃ জুনাইদ তার পদত্যাগপত্রে জানান, কলম বিরতি অব্যাহত রাখার পক্ষে মত দেওয়ার সময় তাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা হয়। মহাসচিব এবং সভাপতির আচরণ সভার পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নেতৃত্বের দুর্বলতা এবং গণতান্ত্রিক মনোভাবের ঘাটতির কারণে তিনি পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন।
অন্যদিকে আপ্যায়ন সম্পাদক মোঃ মোসলেম উদ্দীন তার পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেন, সরকার পক্ষ থেকে কোনো স্পষ্ট ঘোষণা না পাওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র মৌখিক আশ্বাসের ভিত্তিতে কর্মসূচি স্থগিতের সিদ্ধান্ত গ্রহণ হওয়া বিচারকদের প্রতি অবিচার। তিনি অভিযোগ করেন, সভায় তাকে মতামত প্রকাশের সুযোগ দেওয়া হয়নি, যা তার গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ। তিনি স্পষ্ট জানান, অতীতে দেওয়া অনেক আশ্বাস বাস্তবে বাস্তবায়িত হয়নি এবং সে কারণে হঠাৎ কলম বিরতি স্থগিত করা বিচারকদের স্বার্থের পরিপন্থী।
দুই সদস্যই মনে করেন, বিচারকদের নিরাপত্তা ইস্যুর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে এসোসিয়েশনের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নের সংগ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

