স্বঘোষিত ‘ধর্মগুরু’ আশারাম বাপু

ভারতে ধর্ষক ‘ধর্মগুরু’ আশারাম বাপুর যাবজ্জীবন

 

পাঁচ বছর আগে নিজের আশ্রমে এক কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে ভারতের স্বঘোষিত ‘ধর্মগুরু’ আশারাম বাপুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই দোষে তার পুত্র নারায়ণ সাই-সহ দু’জনকে ২০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আজ বুধবার (২৫ এপ্রিল) রাজস্থান রাজ্যের যোধপুরের কারাগারে অস্থায়ী আদালতে এ তিনজনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হয়। যোধপুরের বিচারিক আদালতে রায় ঘোষণার কথা থাকলেও আশারামের অনুসারীদের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কা থেকে কারাগারের ভেতরেই সাজা ঘোষণা হয়।

২০০৩ সালে উত্তর প্রদেশের ওই কিশোরী আশারামের হাতে তার যোধপুরের মানাই গ্রামের আশ্রমে ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগে মামলা করেন। সেই মামলায় ২০১৩ সালের ৩১ আগস্ট গ্রেফতার হয়ে কারাবন্দি রয়েছেন এ স্বঘোষিত ‘ধর্মগুরু’। এখন পর্যন্ত ১২ বার জামিন আবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হন তিনি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, যৌন আক্রমণ থেকে শিশুকে সুরক্ষা আইনসহ দু’টি আইনের মামলায় ৭৭ বছর বয়সী আশারামকে ধর্ষণ, মানবপাচার এবং শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

আশারামের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ওই কিশোরীর স্বজনরা। তার বাবা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। এই লড়াইয়ে যারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। এখন আমি আশা করছি তিনি (আশারাম) তার শাস্তি ভোগ করবেন। এছাড়া (মামলা চলাকালে) যেসব সাক্ষী অপহৃত হয়েছেন বা খুন হয়েছেন, তারাও ন্যায়বিচার পাবেন বলে আশা করছি।’

গত বছরের আগস্টে জোড়া ধর্ষণ মামলায় আরেক ‘বাবা’ গুরমিত রাম রহিম সিংকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেসময় তার ভক্তরা দিল্লিসহ কয়েকটি রাজ্যে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। এতে প্রাণ ঝরেছিল ৩৬ জনের, ক্ষতি হয় ২০০ কোটি রুপির সম্পত্তি।

ভারতজুড়ে আশারামের ৪০০ আশ্রম রয়েছে। এই পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখেই বুধবার কারাগারের ভেতরে তার বিরুদ্ধে রায় ঘোষিত হয়। এ প্রেক্ষাপটে রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, হরিয়ানা ও গুজরাটসহ বেশ কিছু রাজ্যে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি রাখা হয়েছে।