পুরুষের পাশাপাশি নারীদের মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। তিনি বলেন, ‘নারী অনেক সময় স্বেচ্ছায় পুরুষের প্রতি নির্ভরশীল হতে চায়। কিন্তু নির্ভরশীল হয়ে কখনও সমান অধিকার পাওয়া যায় না। তাই পুরুষের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে।’
আজ রোববার (২৬ নভেম্বর) সকালে জধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ উপলক্ষে ১৬ দিনব্যাপী কার্যক্রমের উদ্বোধনের সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ‘অনেক শিক্ষিত মেয়ে ও বিয়ের ক্ষেত্রে শিক্ষা-দীক্ষায় প্রফেশনে তার চেয়ে উঁচুপর্যায়ের পুরুষকে বিয়ে করে। এমনকি মেয়ের চেয়ে উচ্চতায় কম হলেও বিয়ে করতে চায় না। এতে করে নারী-পুরুষের নিয়ন্ত্রণে থাকার ইচ্ছাই পরোক্ষভাবে প্রকাশ করে। নারীদের এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সরে আসতে হবে। কিন্তু নারীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পুরুষ তার চেয়ে কম যোগ্যতার মেয়েকে বিয়ে করে।’
নারী নির্যাতন প্রতিরোধের বিষয়ে আন্তর্জাতিক যত সনদ আছে, বাংলাদেশ তা বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রযুক্তির প্রসারের কারণে নির্যাতনের ধরনও পাল্টেছে। অনলাইনে নারীদের উপহাস করা হয়।’ এ সময় তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হেল্প লাইন (১০৯) বাংলাদেশের প্রতিটি নারীর কাছে পৌঁছাতে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম এনডিসি-এর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কল্পে মাল্টি সেক্টোরাল প্রকল্পের পরিচালক ড. আবুল হোসেন।
নাছিমা বেগম এনডিসি বলেন, ‘কিছু বিকৃত ও মানসিক রোগীর কারণে বাংলাদেশ আজ কলঙ্কিত হচ্ছে। যে বাবা তার মেয়েকে ধর্ষণ করে, সে মানসিক রোগী। যে মানুষ ৪ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে, সে মানসিক রোগী। এই সব মানসিক রোগীকে নিয়ে রিসার্চ করা দরকার।’
জাতিসংঘের বাংলাদেশ আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপো বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে পুরুষের অংশগ্রহণ বাড়ানো জরুরি।’ এই বিষয়ে তিনি নারী নেত্রী ও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইওরি কাটো, ইউএন উইমেনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি শোকো ইশিকাওয়া, ইউএস অ্যাম্বাসির কনসাল জেনারেল শারোন ওয়েলার প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ ২৫ নভেম্বর দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসাবে ঘোষণা করে এবং ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে ১৬ দিনের কর্মসূচি পালন করে। দেশে এই কর্মসূচির প্রতিপাদ্য হলো: ‘নারী আজ অগ্রসর, চায় সমতা জীবনভর’।
নিজস্ব প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম