জাতীয় ও কালো পতাকা উত্তোলন, স্মৃতি স্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পন, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শোক র্যালি, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভাসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে গাজীপুর আইনজীবী সমিতি ভবনে জেএমবি সদস্যদের আত্মঘাতি হামলার ১২তম বার্ষিকী পালন করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে আজ বুধবার (২৯ নভেম্বর) সকালে জেলা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে একটি শোক র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার আদালত প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
এর আগে নিহতদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে জেলা আইনজীবী সমিতি, জেলা জজশিপ, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, নারী আইনজীবী, সহকারী আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সুদীপ চক্রবর্তী জানান, ২০০৫ সালে জেএমবির আত্মঘাতি নৃশংস হামলায় চারজন আইনজীবী এবং ছয়জন বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষ মারা যান। সেই দিনটিকে স্মরণ করে আইনজীবী সমিতি নানা কর্মসূচি পালন করে। এসময় হতাহতদের ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে দেয়া আদালতের রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের ২ নম্বর হলরুমে বোমা হামলা চালায় জেএমবির সদস্যরা। এই হামলায় মারা যান গাজীপুর বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন, আইনজীবী নুরুল হুদা, আনোয়ারুল আজম ও গোলাম ফারুকসহ আটজন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে জেএমবির সদস্য আসাদ ওরফে জিয়া। ঘটনার দিনই বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা করে পুলিশ। মামলার এজাহারে জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আব্দুর রহমান, আতাউর রহমান সানীসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়। ২০০৭ সালের ৪ জুলাই ১০ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। পরে ২০১৩ সালে এ হামলায় জড়িত থাকার দায়ে জামায়াতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)’র ১০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ফাঁসির রায় দেন।
গত বছরের ২৮ জুলাই বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ছয়জনের মুত্যুদণ্ড বহাল রেখে দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং দুইজনকে বেকসুর খালাস দেন।
মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা ছয় জঙ্গি হলেন- এনায়েতুল্লাহ ওরফে ওয়ালিদ ওরফে জুয়েল, আরিফুর রহমান আরিফ ওরফে আকাশ ওরফে হাসিব, সাইদুর রহমান মুনসি ওরফে সাইদুর মুনসি ওরফে ইমন ওরফে পলাশ, আবদুল্লাহ আল সোহেল ওরফে জাহিদ ওরফে আকাশ, নিজামুদ্দিন নিজাম এবং মো. তৈয়বুর রহমান।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে যাবজ্জীবন প্রাপ্তরা হলেন- মসিদুল ইসলাম মাসুদ ওরফে ভুট্টো ও আদনান সামী ওরফে আম্মার ওরফে জাহাঙ্গীর।
আর মো. আশরাফুল ইসলাম ওরফে আরসাদ ওরফে আব্বাস খান ও মো. সফিউল্লাহ ওরফে তারেক ওরফে আবুল কালামকে মামলা থেকে খালাস দেয়া হয়।
জেলা প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম