মিয়ানমার সরকারের দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নারী ও শিশুরা তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে বলে জানিয়েছেন মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল।
সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ প্রতিবেদনের ওপর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ ছাড়া টয়লেট ও টিউবওয়েল একসঙ্গে হওয়ায় পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। আবার টয়লেট দূরে হওয়ায় নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
সাউথ এশিয়ান হিউম্যান রাইটস এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
রোহিঙ্গাদের কাজে নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সুলতানা কামাল বলেন, স্থানীয় জনগণের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখে রোহিঙ্গাদের কাজে নিয়োগ দিতে হবে। এ জন্য স্থানীয় জনগণের সম্মতি নিতে হবে। স্থানীয়দের যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে হবে।
তিনি বলেন, শুরুতে রোহিঙ্গাদের প্রতি স্থানীয় বাসিন্দাদের যে সহানুভূতি ছিল তা কমতে শুরু করেছে। বাজার মূল্যবৃদ্ধি এবং শ্রমবাজারে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের কারণে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
সুলতানা কামাল বলেন, পর্যাপ্ত প্যারামেডিক কর্মীর অভাবে ক্যাম্পগুলোতে সন্ধ্যার পর চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এ পদে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। এতে করে রোহিঙ্গাদের চিকিৎসার পাশাপাশি স্থানীয়দেরও কর্মসংস্থান হবে।
তিনি বলেন, প্রথমদিকের তুলনায় বর্তমানে সরবরাহ কমলেও পর্যাপ্ত খাদ্য রয়েছে। চাল-ডাল সরবরাহ বেশি হওয়ায় রোহিঙ্গারা তা বাজারে বিক্রি করে অন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয় করছে।
শরণার্থী চুক্তি স্বাক্ষর করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, স্বাধীনতার দীর্ঘ বছর পরও শরণার্থী চুক্তিতে স্বাক্ষর না করা আমাদের জন্য লজ্জার বিষয়। শরণার্থী চুক্তিতে স্বাক্ষর করা এ মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি।
রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পাঁচ দিনের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের নেতৃত্ব দেন সুলতানা কামাল। ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ভারতের সাংবাদিক ভারত ভূষণ, মালদ্বীপের মানবাধিকার কর্মী জিহান মাহমুদ, নেপালের মানবাধিকার কর্মী রাজেন্দ্র ঘিমিরি ও শ্রীলংকার মানবাধিকার কর্মী দিকশিয়া ইলাংগাসিংহে তার সঙ্গে ছিলেন।