শেষ হচ্ছে বছর ২০১৭। বলা চলে প্রায় চোখের পলকেই চলে যাচ্ছে নানা ঘটনা-দুর্ঘটনায় জড়ানো বছরটি। আদালতে বেশ কিছু মামলার রায় সারা দেশে মানুষের মুখে মুখে ছিল। তেমন কিছু আলোচিত ঘটনা নিয়েই ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমের সালতামামি।
বছরের আলোচিত রায় ও বিচার সমূহ
এ বছরে আইন ও বিচার বিভাগের কিছু রায় নিয়ে চলছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। সরকারের পক্ষে-বিপক্ষে সমালোচনা ছাড়াও বিচার বিভাগ নিয়ে প্রায় প্রতিটি স্তরে সমালোচনা হয়েছে। কি সেই রায়গুলো- অবসরের পর রায় লেখা ও বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি, বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি প্রণয়ন নিয়ে আল্টিমেটাম, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়, পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতারে সুপ্রিমকোর্টের নীতিমালা, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সি বাতিল সংক্রান্ত রায়ের অনুলিপি প্রকাশ, বিনা বিচারে বিভিন্ন মামলায় আটকদের মুক্তি।
এসকল রায়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা ও সমালোচনা হয়েছে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে। সরকারের বিপক্ষে সমালোচনা করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এমনকি সাধারণ জনগণও এই রায় নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা করেছেন।
এছাড়া বছরের শুরু থেকেই শুরু হয়েছে আলোচিত বিভিন্ন রায়ের বিচার। তন্মধ্যে, বছরের শুরুটাই হয় সাকার স্ত্রী-পুত্রের বিচার দিয়ে। এরপর একে একে হিযবুত তাহরীরের প্রধান সমন্বয়কসহ ছয়জনের বিচার, তাভেলা সিজার হত্যা মামলার বিচার, ডেসটিনির দুই মামলার বিচার, কুনিও হোশি হত্যার বিচার, মিতু হত্যা : অস্ত্র মামলায় বিচার, রানা প্লাজা ধস : সোহেল রানাসহ ৪১ আসামির বিচার, ফখরুলসহ ৭৪ জনের বিচার, আহসানউল্লাহর শিক্ষক ফেরদৌসের বিচার, ক্রিকেটার শাহাদাত ও তার স্ত্রীর বিচার, হলমার্কের ১১ মামলার বিচার শুরু হয়।
হাইকোর্টে নিষ্পত্তি হয়েছে সবচেয়ে বড় মামলা পিলখানায় হত্যাযজ্ঞের মামলা। সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় রিভিউ খারিজ হওয়ায় হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ তিনজনের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আমৃত্য কারাবাস নিয়ে রিভিউ খারিজ করেছেন আপিল বিভাগ।
গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যার দায়ে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র রেদোয়ানুল আজাদ রানা ও ফয়সাল বিন নাঈম ওরফে দীপের মৃত্যুদণ্ডসহ বিচারিক আদালতের রায় বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ খালাস পেলেও দণ্ডিত হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদা।
নামজারি মামলায় হেরে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে হারাতে হয়েছে বাড়ি। তবে ফাঁসির দড়ি থেকে রেহাই পেয়েছেন বাবা মায়ের হত্যাকারী ঐশী রহমান। পেয়েছেন যাবজ্জীবন সাজা। অবৈধ হয়েছে মোবাইল কোর্ট আইন। সেই সঙ্গে বিচারপতিদের অপসারণে আনা ষোড়শ সংশোধনীও।
তবে দীর্ঘদিন পরে ঐক্যমত্যে পৌঁছে জারি করা হয়েছে নিম্ন আদালতের শৃংঙ্খলা বিধির গেজেট।
ষোড়শ সংশোধনী
২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা ফিরে পায় সংসদ। ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৪ সালের ৫ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন ৯ আইনজীবী। শুনানি শেষে ২০১৬ বছরের ৫ মে হাইকোর্টের তিন বিচারকের বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়।
পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে চলতি বছরের ৮ মে আপিল বিভাগের ‘ফুল বেঞ্চে’ শুনানি শুরু হয়। সব মিলিয়ে ১১ দিন রাষ্ট্র ও রিট আবেদনকারীর বক্তব্য শোনেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাসহ সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকরা। গুরুত্বপূর্ণ মামলাটির শুনানিতে আপিল বিভাগ আদালত বন্ধু হিসেবে ১০ জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীর বক্তব্য শোনেন। তাদের মধ্যে ড. কামাল হোসেনসহ নয়জনই সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের পক্ষে অর্থাৎ ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পক্ষে মত দেন। পরে ৩ জুলাই বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেয়া হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
তবে হাইকোর্টের রায়ের কিছু পর্যবেক্ষণ ‘এক্সপাঞ্জ’ করে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল ‘সর্বসম্মতভাবে’ খারিজ করার রায় ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি। ১ আগস্ট রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। ১৪ সেপ্টেম্বর ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং তার কিছু পর্যবেক্ষণের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে জাতীয় সংসদে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেয়া এ রায় নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয় ‘বাকবিতণ্ডা’। ক্ষমতাসীন সরকার, আওয়ামী লীগ ও আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা এ আদেশের বিপক্ষে অবস্থান নেন। অপরদিকে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা রায়ের পক্ষে অবস্থান নেন। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এক মাসের ছুটি চেয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে ৩ অক্টোবর আবেদন করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। ছুটির আবেদন নিয়ে নানা আলোচনার মুখে ১৪ অক্টোবর দেশ ত্যাগ করেন প্রধান বিচারপতি। দেশত্যাগের সময় অসুস্থতার কথা অস্বীকার করেন তিনি। এ নিয়ে জ্বল্পনা-কল্পনা চলার মধ্যেই ১১ নভেম্বর প্রধান বিচারপতির পদ থেকে পদত্যাগ করার চিঠি পাঠান রাষ্ট্রপতি বরারব। কানাডা যাওয়ার পথে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনে তিনি রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগপত্রটি জমা দেন।
নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন মামলার রায়
নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন মামলার রায়ে কাউন্সিলর নুর হোসেন এবং সাবেক র্যাব অধিনায়ক তারেক সাঈদসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রাখে আদালত। তবে এর আগে এই মামলায় ২৬ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত। এদের মধ্যে ১৫জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে বাকি ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। তাদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে আরো দুইবছর সাজার নির্দেশ দেয় আদালত। এছাড়া নয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের রায় হাইকোর্টেও বহাল রয়েছে।
বোমা পুঁতে রেখে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা মামলা
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ১০ জনকে গুলি করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের রায় দেওয়া হয়। গত ২০ আগস্ট ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মমতাজ বেগম এই রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১০ আসামি হলেন—ওয়াসিম আক্তার ওরফে তারেক হোসেন ওরফে মারফত আলী, মোহাম্মদ রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম ওরফে রাশেদুজ্জামান খান ওরফে শিমুল খান, মো. ইউসুফ ওরফে মোসাদ মোড়ল ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু ফকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে মুফতি।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০০ সালের ২২ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার শেখ লুৎফর রহমান সরকারি আদর্শ কলেজ মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশ করার কথা ছিল। এর আগে ২০ জুলাই ওই কলেজের পাশ থেকে ৭৬ কেজি ওজনের শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় গোপালগঞ্জ থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা করা হয়।
পরবর্তী সময়ে ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার মুন্সী আতিকুর রহমান আসামি মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার আরেকটি মামলা
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা ঘটনার দুই মামলায় বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার আবদুর রশীদসহ ১১ আসামিকে কারাদণ্ড দেন আদালত। গত ২৯ অক্টোবর ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জাহিদুল কবির দুই মামলার রায় ঘোষণা করেন।
হত্যাচেষ্টার মামলায় ১১ আসামির প্রত্যেককে ২০ বছরের কারাদণ্ড ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তাদের সবাইকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়।
১৯৮৯ সালে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বাড়িতে গুলি ও বোমা হামলার ঘটনায় এই মামলা করা হয়। তদন্ত করে পুলিশ হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনের দুই ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
বিচারে সাজাপ্রাপ্ত ১১ আসামি হলেন—বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার আবদুর রশীদ, মো. জাফর আহম্মদ, হুমায়ুন কবির ওরফে হুমায়ুন, মিজানুর রহমান, শাজাহান বালু, গাজী ইমাম হোসেন, খন্দকার আমিরুল ইসলাম কাজল, গোলাম সারোয়ার ওরফে মামুন, ফ্রিডম সোহেল, সৈয়দ নাজমুল মাকসুদ মুরাদ ও জর্জ মিয়া। অপরাধের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় আসামি হুমায়ুন কবির ওরফে কবিরকে দুই মামলাতেই খালাস দেওয়া হয়।
সাজার রায় বাতিল, এরশাদ খালাস
বিমানের রাডার ক্রয়সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলা থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। গত ১৯ এপ্রিল ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা এ রায় দেন।
খালাস পাওয়া অপর দুই আসামি হলেন বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান সুলতান মাহমুদ ও বিমানবাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। মামলার অপর আসামি ছিলেন ইউনাইটেড ট্রেডার্সের পরিচালক এ কে এম মুসা। শুরু থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। পলাতক অবস্থায় তিনি মারা যাওয়ায় তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
১৯৯২ সালের ৪ মে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় এরশাদসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
অভিযোগে বলা হয়, আসামি এরশাদসহ অপর আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে ইচ্ছা করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিমানবাহিনীর প্রস্তাবিত ১৯৮১ সালের রাডার মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করে ফ্রান্সের সিএসএফ কোম্পানির রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিং কোম্পানির রাডার কেনেন। এতে সরকারের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়।
মোবাইল কোর্ট
১১ মে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় স্থগিত রেখেছেন।
বিশ্বজিৎ দাস হত্যা
পুরান ঢাকার টেইলার্স কর্মী বিশ্বজিৎ দাস হত্যার দায়ে ৬ আগস্ট আট আসামির মধ্যে দুজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। ২১ আসামির মধ্যে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। পলাতক বাকি ১১ আসামি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
নাজমুল হুদা
ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে দুর্নীতির দায়ে ৮ নভেম্বর সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাকে বিচারিক আদালতের দেওয়া সাত বছরের কারাদণ্ডের সাজা কমিয়ে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তার স্ত্রী সিগমা হুদার কারাগারে থাকাকালীন সময়কে সাজা হিসেবে গণ্য করেছেন।
খাদিজা হত্যাচেষ্টা
সিলেটের কলেজছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিস হত্যাচেষ্টা মামলায় ছাত্রলীগের নেতা বদরুলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। এ বছরের ৮ মার্চ সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা এ রায় দেন। গত বছরের ৩ অক্টোবর খাদিজা বেগমকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং ছাত্রলীগ এক নেতা বদরুল আলম। এ ঘটনায় খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। গ্রেপ্তারের পর বদরুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
বিডিআর হত্যা মামলা
২৭ নভেম্বর পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দফতরে হত্যাযজ্ঞের দায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালেতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১৫২ জনের মধ্যে ১ জন মারা গেছেন। বাকি ১২ জনের মধ্যে ৮ জনের সর্বোচ্চ সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও অন্য চারজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১৬০ জনের মধ্যে ১৪৬ জনের সাজা বহাল রয়েছে। বাকি ১৪ জনের মধ্যে দু’জন আগেই মারা গেছেন। আর অন্য ১২ জন খালাস পেয়েছেন।
খালাসপ্রাপ্ত ৬৯ জনের সাজা চেয়ে ফৌজদারি আপিল করেছিলেন রাষ্ট্রপক্ষ। তাদের মধ্যে ৩১ জনকে যাবজ্জীবন ও চারজনকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর অন্য ৩৪ জনের খালাসের রায় বহাল রয়েছে। সব মিলিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেয়েছেন ১৮৫ জন।
নিজস্ব প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম