প্রশ্নপত্র ফাঁস মহামারী আকারে রূপ নিয়েছে মন্তব্য করে অবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রীকে তার ব্যর্থতা, দুর্নীতি অনিয়ম স্বীকার করে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু। পদত্যাগ না করলে তাকে বরখাস্ত করে নতুন মন্ত্রী নিয়োগ করতে প্রধানমন্ত্রীকে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলেন সরকারের শরীক জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সংসদে উপস্থিত ছিলেন। জিয়াউদ্দীনের এই বক্তব্যকে টেবিল চাপড়ে সমর্থন জানান অনেক সংসদ সদস্য। তার বক্তব্যের শেষে ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, ‘নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি শুনেছেন, তিনি তার বিবেক বিচেনায় জাতির স্বার্থে যতটুকু করার প্রয়োজন অবশ্যই তিনি করবেন।’
জিয়া উদ্দিন বাবলু বলেন, ‘প্রশ্নফাঁস মহামারী আকারে বিস্তার লাভ করছে। এটি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বলা হয়েছিল যে প্রশ্নফাঁস ধরিয়ে দিতে পারলে তাকে ৫ লাখ টাকা পুরস্কৃত করা হবে। অথচ আজ তুষার শুভ্র নামে একটা ফেসবুক আইডি থেকে বলা হয়েছে ইংরেজি প্রশ্ন আছে সংগ্রহ করতে হলে এত টাকা লাগবে?’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অনেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হয়েছে, হচ্ছে। বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এই কয়েক বছরে আমাদের অনেক অর্জন হয়েছে। কিন্তু আগামী প্রজন্মকে যদি সত্যিকার শিক্ষায় শিক্ষিত করতে না পারি, আর শুধু মাত্র সনদ বিক্রির জন্য যদি শিক্ষিত করি তাহলে তো কিছুই শিখবে না। এই শিক্ষা অর্থহীন। আমরা আগামীতে কাদের হাতে দেশটা দিয়ে যাব। শিক্ষিত সমাজ ছাড়া সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারব না। আমরা চাই সত্যিকার শিক্ষা। প্রধানমন্ত্রী চান জ্ঞানভিত্তিক সমাজ, আমরাও চাই জ্ঞানভিত্তিক সমাজ।’
এসময় তিনি বলেন, ‘‘কয়েকদিন আগে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা অধিদপ্তরের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘আপনারা ঘুষ খান সহনীয় পর্যায়ে।’ তিনি এও বলেছেন ‘আমিও ঘুষ খাই, অন্য মন্ত্রীরাও ঘুষ খান।’ এটা বলার পরে উনি মন্ত্রী হিসেবে থাকতে পারেন? আর একজন মন্ত্রী একথা বলতে পারেন? এটা যখন ছাত্ররা শুনবে মন্ত্রী বলছেন সহনীয় পর্যায়ে ঘুষ খেতে তাহলে প্রশ্নফাঁস ঠেকাবেন কিভাবে। উনার উচিত ছিল সেদিনই পদত্যাগ করা।’ প্রধানমন্ত্রীকে এব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘যে মন্ত্রী ঘুষ সহনীয় মাত্রায় খেতে বলেন, সেই মন্ত্রীর কথা তো কেউ শুনবেই না। তার সচিব শুনবেন না, অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা শুনবেন না, কেউ শুনবেন না। মন্ত্রী যেখানে ঘুষ খেতে উৎসাহিত করছেন, তাহলে কিভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ন্ত্রণ করবেন এটা আমার বোধদয় হয় না। তাই অবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রী তার ব্যর্থতা, দুর্নীতি, অনিয়ম স্বীকার করে নিয়ে পদত্যাগ করুন। অথবা প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি তাকে বরখাস্ত করে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য এবং শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে নতুন মন্ত্রী নিয়োগ করবেন।’