জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় শুনতে আদালতে হাজির হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
আজ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পৌনে ২টায় আদালতে পৌঁছান খালেদা জিয়া। এর আগে বেলা পৌনে ১২টায় রাজধানীর গুলশানের বাসভবন থেকে খালেদা জিয়া রওনা হন।
দীর্ঘ ১০ বছরের আইনি প্রক্রিয়া শেষে টানটান উত্তেজনার মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা হবে বৃহস্পতিবার। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রধান আসামি; তাই এ রায়ে আগ্রহ শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের জন্য রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশি বাজারের আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে প্রস্তুত আদালত।
সকাল ১০টা থেকে আদালতের প্রস্তুতি শুরু হয়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাগারে থাকা দুই আসামি মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সলিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদকে আদালতে নেওয়া হয়েছে।
রায় ঘিরে আদালত এলাকায় ঘুরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে দেখা গেছে। মোড়ে মোড়ে বসানো হচ্ছে তল্লাশি চৌকি, চলাফেরায় আনা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ। বকশিবাজার মোড় থেকে উমেশ দত্ত রোড পর্যন্ত এলাকায় জনসাধারণের প্রবেশ সীমিত করলেও আদালতে প্রবেশের রাস্তা দিয়ে প্রতি প্রতিষ্ঠানের একজনের বেশি প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়াও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার আসামি সাবেক এমপি কাজী সলিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান। মামলার শুরু থেকেই তিন আসামি তারেক রহমান, ড. কামাল সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান পলাতক।
এতিমখানার জন্য বিদেশ থেকে আসা দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ৩ জুলাই বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান রায় ঘোষণা করবেন বলে দিন ধার্য রয়েছে।
মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সৌদি আরব থেকে এতিমদের জন্য আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ১৩ মাস তদন্ত শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। ২৩৬ কার্যদিবসে ৩২ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, ২৮ কার্যদিবসে আসামিপক্ষের আত্মপক্ষ সমর্থন ও ১৬ কার্যদিবসে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়। বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার মাধ্যমে নিম্ন আদালতের বিচারকাজ শেষ হবে।