দীর্ঘ ১০ বছরের আইনি প্রক্রিয়া শেষে টানটান উত্তেজনার মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা হবে আজ বৃহস্পতিবার।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রধান আসামি; তাই এ রায়ে আগ্রহ শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। তিনি দণ্ডিত হবেন, না খালাস পাবেন- এ আলোচনা সর্বত্র। সবার দৃষ্টি আদালতে।
আজ ঢাকায় মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ হলেও দুই প্রধান দলের পাল্টাপাল্টি ঘোষণায় নিরাপত্তা নিয়ে রয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। রাজধানীতে বিজিবি টহল দিচ্ছে। সতর্কাবস্থায় রয়েছে পুলিশ-র্যাব।
এতিমখানার জন্য বিদেশ থেকে আসা দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ৩ জুলাই বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান রায় ঘোষণা করবেন বলে দিন ধার্য রয়েছে।
সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দুই বছরের বেশি কারাদণ্ড হলে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না খালেদা জিয়া। পাঁচ বছরের জন্য সরকারি পদ গ্রহণে অযোগ্য হবেন। তবে সাজা হলে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলের সুযোগ পাবেন খালেদা জিয়া। আপিল আবেদন গ্রহণ করে নিম্ন আদালতের সাজা স্থগিতের এখতিয়ার রয়েছে হাইকোর্টের। সে ক্ষেত্রে জামিনের বিধান রয়েছে। তখন নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধা থাকবে না।
মামলার বাদী দুদকের প্রধান আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল মনে করেন, আজই রায় হবে। তার দাবি, তিনি তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সব অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি সমকালকে বলেন, দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ১০৯ ধারায় প্রধান আসামি খালেদা জিয়া ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকীর সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অপর আসামিদেরও সাত বছরের সাজা প্রার্থনা করা হয়েছে।
অবশ্য খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া দাবি করেছেন, ন্যায়বিচার হলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালাস পাবেন। আদালতে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের একটিও প্রমাণিত হয়নি। রাজনৈতিক হয়রানি ও হেয়প্রতিপন্ন করতেই ‘সেনাসমর্থিত’ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ‘মাইনাস টু ফর্মুলার’ অংশ হিসেবে এ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো জাল-জালিয়াতিপূর্ণ ও ঘষামাজা করা।